You are currently viewing ই-কমার্স ব্যবসার সাথে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সম্পর্ক

ই-কমার্স ব্যবসার সাথে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সম্পর্ক

যুগটা এখন তথ্য প্রযুক্তির। প্রযুক্তি সম্পর্কিত নানান সুযোগ-সুবিধার সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে মানুষের নিত্যদিনকার জীবনপ্রবাহ। সেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটি সময়েই থাকছে প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা। পাশাপাশি বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো দিকে সফল হওয়ার সম্ভাবনাটাও পূর্বের তুলনায় অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রয়োজনীয় দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে অসংখ্য স্বপ্নবাজ মানুষ।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছেন অনেকেই। সফলতা লাভ করে সকলের আইডল হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন, এমন ব্যাক্তির সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। এবার নিশ্চয় আপনার মনেও এসম্পর্কে কিছুটা আগ্রহের উদ্রেক ঘটেছে। কেননা আমরা সকলেই সফলতার পথ খুঁজে পেতে চাই এবং সফল হতে চাই। আপনিও যদি এমনটা হোন তবে আজকের এই আয়োজন আপনার জন্যই। সাথেই থাকুন। 

ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাথে পরিচিত কিংবা অপরিচিত সকলের জন্যই আজকের এই লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং খুব সহজেই পুরো ব্যাপারটিকে বুঝতে হলে শুরুতেই আমাদের এই টপিকের মূল শব্দ ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। চলুন, বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক। 

ই-কমার্স কি? 

সহজ কথায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেকোনো পণ্য কেনা বেচা করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ই-কমার্স। পাশাপাশি একটি অনলাইন ব্যবসার মোটামুটি সকল দিকগুলোকেই ইকমার্স বলা যেতে পারে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

সোজা কথায় ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে যে ব্যবসায়িক মাধ্যম গড়ে উঠেছে তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে পণ্য,প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ডের প্রচারনার পদ্ধতি মূলত এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়েরই অংশ। গুগল, ইউটিউব, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ফেসবুক সহ নানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে এই ধাপ পেরুতে হয়। 

ই-কমার্সের সাথে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সম্পর্ক

ধরুন আপনি ঘরে বসেই কোনো একটি পণ্য অর্ডার করলেন। মূল্য পরিশোধ করে যথাসময়ে তা পেয়েও গেলেন। কাল্পনিক এই একটি প্রক্রিয়াই আপনাকে খুব সহজেই বুঝিয়ে দিবে আদৌ ই-কমার্সের সাথে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা। উক্ত ঘটনায় ঘরে বসে পণ্য অর্ডার করার ধাপটি হলো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উদাহরণ। অপরদিকে যিনি পণ্যটি বিক্রি করছেন কিংবা আপনাকে সার্ভিস দিচ্ছেন তিনি মূলত ই-কমার্সের যেকোনো একটি অংশ নিয়ে কাজ করছেন। অর্থ্যাৎ ই-কমার্সে সফল হতে একজন ব্যবসায়ীকে যে মাধ্যমটি ব্যবহার করতে সেই মাধ্যমটি হলো ‘ডিজিটাল মার্কেটিং‘। যার কারণে দুটো বিষয়ই একে অপরের সাথে বিশেষ সম্পর্কযুক্ত। 

প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সফলতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং গুরুত্বকে কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। বাংলাদেশের জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান চালডাল, ইভ্যালী, দারাজের মত বড় বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোও এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের উপর নির্ভরশীল। মূলত ই-কর্মাস একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে তৈরি করতেই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সুত্রপাত। 

রেডি ই-কমার্স

কেনো ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রয়োজন? 

বর্তমানে আমাদের দেশে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ব্যবহার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে৷ জেনে অবাক হবেন বাংলাদেশের তুলনায় সারাবিশ্বে এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের চাহিদা অনেক বেশি। সুতরাং বুঝতে পারছেন কত্ত ব্যাপক আয়োজন! যেসব ব্যবসায়ী ডিজিটাল মার্কেটিংকে তাদের ব্যবসার জন্য একেবারেই অপ্রয়োজনীয় মনে করেন তাদের বলে রাখা ভালো, এই ডিজিটাল মার্কেটিংই আপনাকে নতুন কাস্টমার তৈরি করতে সাহায্য করবে৷ কেননাঃ- 

ভোক্তারা দিনদিন ডিজিটাল হচ্ছে

প্রতিটি পণ্যের ভোক্তার মাঝে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাশাপাশি তারা পূর্বের তুলনায় অতিরিক্ত সচেতনতা অবলম্বন করেই পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যার ফল হিসেবে তারা পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পাশাপাশি বিভিন্ন রিভিউ দাবি করছে৷ এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর ভোক্তাকে জানাতে সাহায্য করছে হাতের কাছে থাকা মোবাইল বা কম্পিউটারটি। পণ্যের ছবি, পণ্যের বৈশিষ্ট্য এবং পণ্য কোন কোম্পানি সরবরাহ করছে, ভোক্তা মতামতসহ নানানধরণের প্রশ্নের উত্তর পেতে তারা ব্যবহার করছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং গুগল। ভোক্তার এসব চাহিদা মেটাতে আপনাকে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সুবিধা নিতে হবে। এতে করে যেমন আপনার পণ্যের প্রচার-প্রসার হবে তেমনি মুনাফার ক্ষেত্রেও কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে আপনার কোম্পানি। 

স্বল্প খরচে অধিক সুবিধা 

প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতির সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো এটি। প্রচলিত মার্কেটিং পদ্ধতির তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে খুব কম খরচে আপনি আপনার ব্যবসায়কে কাঙ্ক্ষিত কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। একটি ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেইজ বা একটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার পণ্যকে লক্ষাধিক কাস্টমারের কাছে খুব সহজে পৌঁছাতে পারবেন। যা প্রচলিত লোকাল মার্কেটিং পদ্ধিতে করাটা অনেক ব্যয়বহুল। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এই সুযোগ লুফে নিচ্ছে পৃথিবীর অধিকাংশ ব্যবসায়ী। তবে আপনি কেনো নিজেকে গুটিয়ে রাখবেন?

সহজেই ট্র্যাক করা যায়

মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মার্কেটিংয়ের রেজাল্ট ট্র্যাক করা। কাজটি ম্যানুয়ালি করা যতটা কঠিন, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাহায্যে করা ততটা সহজ৷ আপনি যদি আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ন অংশ ‘এসইও’ করেন তাহলে সহজেই ভিজিটর পাবেন। যা আপনার পণ্যের ক্ষেত্রে প্রচারণা তৈরিতে শতভাগ কার্যকর৷ 

পরবর্তীতে গুগল এনালাইটিকের মাধ্যমে ট্র্যাক করে জেনে নিতে পারবেন কতজন ক্রেতার কাছে আপনার পণ্যের প্রচারণা পৌঁছালো। ডিজিটাল ট্র্যাকগুলিকে মাথায় রেখে আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিভিন্ন প্ল্যান পরিবর্তন করতে পারেন৷ 

বিঃ দ্রঃ ওয়েবসাইট সম্পর্কিত যেকোনো সার্ভিস পেতে চাইলে আমাদের সাথে আজই যোগাযোগ করুন। সেরা সার্ভিস এবং বিভিন্ন নির্দেশনাসহ শতভাগ সাফল্য নিশ্চিত করছি আমরা। 

ক্রেতা এবং ব্যবসায়ীর সম্পর্ক স্থাপন 

একজন ব্যবসায়ী হিসেবে ক্রেতার সাথে সম্পর্ক তৈরি করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। যা আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই করতে পারবেন। ওয়েবসাইট, ব্লগ, ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব ভিডিও ইত্যাদির মাধ্যম আপনাকে সরাসরি ক্রেতার সাথে একটি যুতসই মেলবন্ধন তৈরি করবে। যা আপনার পণ্য বা সার্ভিস সেলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা একজন সচেতন ক্রেতা সবসময়ই চাইবে পরিচিত এবং মানসম্মত পণ্য বা সেবা প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান হতে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ করতে। 

প্রতিযোগী ব্যবসায়ী

প্রচলিত ব্যবসা এবং অনলাইন ব্যবসা.দু’টোর ক্ষেত্রেই প্রতিযোগী ব্যবসায়ীর ব্যাপারটি থাকে। তবে দুই ক্ষেত্রে এর ধরণ একেবারেই ভিন্ন। এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেকে ই-কমার্সের সাথে সম্পৃক্ত করতে চান এবং সফল হতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই অনলাইন বিজনেস সম্পর্কিত প্রতিযোগী ব্যবসায়ী সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। তারা কেমন কাজ করছে, কি কি পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাদের ক্রেতাসাধারণকে কেমন সেবা দিচ্ছে সবকিছু নিয়েই আপনার প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। 

আপনি যদি নিজের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ভাবেন এবং কাজ করেন সেক্ষেত্রে এই রিসার্চটি বেশ সহজ হয়ে যাবে। পাশাপাশি বর্তমান ই-কমার্স সেক্টর পুরোটাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দখলে। প্রতিযোগীকে ঘায়েল করতে হলে আপনাকেও এতে যুক্ত হবে। সুতরাং প্রতিযোগীকে কোনো সুযোগ দিতে না চাইলে আজই ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে সিরিয়াস হোন। 

মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা কি?

  • কম খরচে যে কেউ তার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারে।
  • এটি পণ্যের যেকোনো বিজ্ঞাপন খুব অল্প সময়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়৷ 
  • ঘরে বসেই পুরো কার্যক্রমটির পরিচালনা করা যায়। 
  • খুব সহজেই যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করা যায়। যা অফলাইনে করা খুবই কঠিন।
  • ঘরে বসেই নিশভিত্তিক ওয়েবসাইটের প্রচার প্রচারণা করা যায়। 
  • সহজে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হয়। 
  • ক্রেতাসাধারণের সাথে অনলাইনে কমিউনিটি তৈরি করা যায়। পরবর্তী এই কমিউনিটিই আপনার সেলিং বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে। 

শেষ কথা

যেখানে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং করার জন্য বেশি পরিমানে টাকার প্রয়োজন হয় সেখানে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাহায্য নিয়ে পুরো কাজটা অল্প খরচেই সেরে ফেলতে পারেন। পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তো আছেই৷ ই-কমার্সের পুরো ব্যাপারটিই অনলাইনভিত্তিক। আপনাকে সেটি মাথায় রেখেই আগাতে হবে। এক্ষেত্রে সেরা সমাধান হতে পারে এই ডিজিটাল মার্কেটিং। এই সেক্টরের আওতায় অনেক ক্যাটাগরি রয়েছে। যার কয়েকটিকে কাজে লাগিয়েই আপনি সফল হতে পারবেন। 

সুতরাং এই ব্যাপারে জেনে-বুঝে কাজে নেমে পড়ুন। পাশাপাশি যেকেনো সহায়তায় আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখুন। কেননা আমরা নিয়মিত এই ব্যাপারে বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করছি। এতে হয়তো আপনার অজানা প্রশ্নের উত্তর কিংবা সমাধান যেকোনোটাই পেয়ে যেতে পারেন।

Facebook Comment