You are currently viewing ই-কমার্স ওয়েবসাইট সিকিউরিটি এর প্রয়োজনীয়তা

ই-কমার্স ওয়েবসাইট সিকিউরিটি এর প্রয়োজনীয়তা

ই-কমার্স ওয়েবসাইট হলো ভার্চুয়াল দোকান, যেখানে ভিজিটরদের কাছে নিজের সকল পণ্য সঠিক ভাবে প্রদর্শনের জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর বিকল্প নেই। বাংলাদেশ যদিও কিছুটা পিছিয়ে ছিল তবে বর্তমানে করোনার কারণে ই-কমার্স কিন্তু ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই জনপ্রিয়তা ধরে রাখার জন্য শুধুমাত্র ক্রয়-বিক্রয়ই যথেষ্ট নয়। আপনার ব্যবসায়ের জন্য গ্রাহকদের ধরে রাখতে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটটির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সুরক্ষা হলো ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণের প্রাথমিক কারণ। সুতরাং, আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার অনলাইন ই-কমার্স সাইট টি  সম্ভাব্য  হুমকী থেকে সুরক্ষিত কি না। প্রতিদিন হাজার হাজার ওয়েবসাইট হ্যাকারদের কবলে পড়ে অকেজো হয়ে যাচ্ছে হাজারো ওয়েবসাইট। বিশেষ করে ই-কমার্স ভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলো বেশী হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে। একটা ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার অভাবের কারণে শুধু যে এডমিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা কিন্তু নয়, বরং  ওয়েবসাইটটির সাবস্ক্রাইবার,  ইউজার সহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাছাড়া  ভাবুন তো,  আপনার গুরুত্বপূর্ণ বিজনেসের প্রচার-প্রচারণা থেকে শুরু করে সব রকম কার্যপ্রণালী আপনি আপনার ওয়েবসাইট থেকে পরিচালনা করছেন এমতাবস্থায় যদি আপনার এই ওয়েবসাইট টি অন্য কারো কন্ট্রোলে চলে যায় সেই ক্ষেত্রে আপনি বাণিজ্যিক ভাবে কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন? তাই আপনার ই-কমার্স বিজনেস ওয়েবসাইটটির নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। আরো বিস্তারিত জানতে চলুন আমরা জেনে নিই ই-কমার্স ওয়েবসাইট সিকিউরিটি সম্পর্কে –

ই-কমার্স ওয়েবসাইট সিকিউরিটি কিভাবে নিশ্চিত করবোঃ

ওয়েবসাইট তৈরি করার পরিকল্পনা করে থাকলে প্রথমে আপনার ডেভেলপারের সাথে আলোচনা করতে হবে।   আপনার ডেভেলপার যদি অভিজ্ঞ হয় অবশ্যই সে বা তার প্রতিষ্ঠান আপনাকে  সিকিউরিটি সম্পর্কে সতর্ক করবে। এরপর ডেভেলপার এর পরামর্শ অনুযায়ী হোস্টিং নিন। এরপর আপনার ওয়েবসাইটের পরিপূর্ণ নিরাপত্তার জন্য  আপনার ডেভেলপার কে অবশ্যই  তার ন্যায্য মূল্যটি  পরিশোধ করুন। অনেক সময় দেখা যায়, ক্লায়েন্টরা  ডেভেলপারদের দিয়ে অল্প দামে ওয়েবসাইট তৈরি করে নেয়। ফলে অনেক  ডেভেলপাররা ক্লায়েন্ট এর সাথে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে না।  দেখা যায়, পরবর্তীতে সেই  ওয়েবসাইটের কর্তৃপক্ষ বা এডমিন  ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। একটি ওয়েবসাইট ডেভেলপ করার পূর্বে, আপনার ডেভেলপার অথবা  সেই প্রতিষ্ঠানের সাথে মেইনটেনেন্স এর জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। যেন আপনার ওয়েবসাইট টি কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত হলে  সেই ডেভেলপার বা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে আপনার ওয়েবসাইট টি কে পুনরায় সুরক্ষিত করে নিতে পারেন। কিছু স্ক্রিপ্ট ও লাইনের মাধ্যমে  ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে,  সেগুলো আপনার ওয়েবসাইটে আছে কিনা অথবা থাকলেও সেগুলোর কোয়ালিটি কেমন সে সম্পর্কে আপনাকে  নিশ্চিত হতে হবে।  পাশাপাশি ওয়েবসাইটে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার যুক্ত থিম, প্লাগিন বা স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

আপনার ই-কমার্স  ওয়েবসাইটের সুরক্ষা নিশ্চিত করুনঃ

ওয়েবসাইট সিকিউরিটিশুধু আপনার ওয়েবসাইটের ডেটা সুরক্ষিত রাখলে চলবে না, আপনি আপনার দর্শকদের তথ্য সুরক্ষার জন্যও দায়বদ্ধ। সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা এই জন্য যে, এটি আপনার ওয়েবসাইট রক্ষণাবেক্ষণের কেন্দ্রীয় দিক হিসেবে কাজ করে। ওয়েবসাইট সিকিউরিটি না রাখলে আপনার ই-কমার্স ব্রান্ডগুলিতে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাবে। আপনাকে অবশ্যই আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট টি কে হ্যাকার থেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ডেটা ব্যাক-আপ, যেটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট কে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। আপনার সাইটের ফাইল বা ক্লাউডে থাকা ডেটা ব্যাকআপ যা  প্রয়োজনের সময় পুনরুদ্ধার করতে হবে আপনাকে। তাই যখন আপনার ওয়েবসাইটের কিছু  ফাইল দূষিত হয়ে যায় বা এমন কিছু ত্রুটি থাকে যা আপনার ওয়েবসাইটকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে এবং সেই মুহূর্তে এটি ঠিক করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে,  তখন ডেটা ব্যাকআপের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া সফটওয়্যারের আপডেটগুলি সর্বদা পরিবর্তিত হয় এবং এর জন্য নিয়মিত আপডেটের প্রয়োজন পড়ে। ডেটা চুরির সমস্যাগুলি এড়াতে আপনার ওয়েবসাইট সুরক্ষিত ও  রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সফটওয়্যার আপডেটের শীর্ষে থাকা প্রয়োজন। তাই এই প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করে  আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটটির সুরক্ষা নিশ্চিত করুন। আর আপনি যদি সুন্দর এবং সুরক্ষিত একটি রেডিমেড ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করতে চান তাহলে আজই যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে । আমাদের রয়েছে একদম সাজানো গুছানো রেডিমেড ই কমার্স ওয়েবসাইট যা আপনারা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।

হ্যাকারদের ফাঁদসমূহঃ

বর্তমানে হ্যাকারদের হ্যাকিং বা ফাঁদ বুঝে উঠা কঠিন। কারণ প্রতিনিয়ত সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন উপায় বের করে যাচ্ছে হ্যাকিং কার্যক্রম চালনার ক্ষেত্রে। হ্যাকাররা হ্যাকিং এর উদ্দেশে বিভিন্ন স্পামিং ওয়েবসাইট দ্বারা প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ফ্রী ডাউনলোড বা ব্যবহার সম্পর্কিত অফার প্রদান করে থাকে। এরপর কেউ যদি তার ইলেকট্রনিক ডিভাইসে সেসব  সফটওয়্যার ডাউনলোড করে, তখন হ্যাকাররা কৌশলে ঐ ব্যক্তির সকল তথ্য হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও দেখা যায়, হ্যাকাররা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে  ফিশিং পদ্ধতিতে তাদের হ্যাকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এই পদ্ধতিতে তারা বিভিন্ন ফোন নাম্বার, ইমেইল এর মাধ্যমে লোভনীয়  অফারগুলো দিয়ে থাকে। এসব অফার এর সাথে তারা মূলত একটি ফিশিং লিংক দিয়ে থাকে, যেটি হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে সহায়তা করে।  বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, অফারগুলো লোভনীয় লাগার ফলে যারা অভিজ্ঞ নন, যাদের হ্যাকিংয়ের এই বিষয়গুলো অজানা, তারা হ্যাকারদের ফাঁদে পা দিয়ে বসে। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের  ফাঁদ প্রতিনিয়ত হ্যাকাররা তৈরী করছে।

হ্যাকারদের হাত থেকে ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখতে করণীয়ঃ 

  • হ্যাকারদের হাত থেকে যদি আপনার ওয়েবসাইট টি কে সিকিউর করতে চান তাহলে নিচের টিপসগুলো ফলো করতে পারেন। 
  • সার্ভারে ফাইল আপলোড করার পর আপডেট করা হলে সাথে সাথে ব্যাকআপ নিয়ে রাখা উচিত। এতে সাইট হ্যাকড হলেও ফিরে পাওয়ার পর আবার পুনঃবিন্যস্ত করা যায়।
  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডোমেইন-হোস্টিং নেয়ার পর আর ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করা হয় না। এই ডিফল্ট ক্রেডেনশিয়াল যেকোনো সময় ওয়েবসাইটের অ্যাকসেস হারানোসহ নানা বিপদের কারণ হতে পারে।
  • নিজের ওয়েবসাইট কে সুরক্ষিত রাখতে সচেতনতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হ্যাকারদের হাত থেকে ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখার জন্য ইমেইল,মোবাইল নম্বর কিংবা অন্যান্য প্লাটফর্ম দ্বারা আসা নানান লোভনীয় অফার এর ফাঁদে পা না দেওয়া।অর্থাৎ লোভনীয় বা সন্দেহজনক কোনো লিংক ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে সবসময় আসল সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ওয়েবসাইটের ব্যাক-আপ নিয়ে রাখতে হবে।
  • বিভিন্ন থার্ড পার্টি স্পামিং এবং অবিশ্বস্ত ওয়েবসাইট গুলো থেকে প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন। 

হ্যাকাররা যাতে ইউজার নেইম ও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে পাসওয়ার্ড দিয়ে বারবার লগইন করার চেষ্টা করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে প্লাগিন ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে কেউ কতবার ভুল পাসওয়ার্ড দিয়ে চেষ্টা করার পর আইপি ব্লকড হয়ে যাবে সেটি চালু করা যায়। ফলে কেউ একাধিকবার ভুল পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করার চেষ্টা করলে সে আর ওই আইপি থেকে লগইন করতে পারবে না।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ

ওয়েবসাইট পাসওয়ার্ডই-কমার্স ওয়েবসাইট সিকিউরিটি এর জন্য আপনাকে অবশ্যই  চিন্তা করতে হবে হোস্টিং সিপ্যানেল, ইমেইল, ওয়ার্ড-প্রেস ড্যাশ-বোর্ড লগইন পাসওয়ার্ড নিয়ে। সেক্ষেত্রে, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। মূলত পাসওয়ার্ডে সিম্বল, নাম্বার ও ক্যাপিটাল লেটার ও স্মল লেটারের সমন্বয় রাখাটাই বাঞ্চনীয়। যেমনঃ A@ss56% এ ধরনের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে আপনার ওয়েবসাইট টি হ্যাকিং থেকে ঝুঁকি মুক্ত থাকবে। আপনার মনে রাখতে সহজ হয় এমন কোন  কঠিন পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারেন।

ই-কমার্স ওয়েবসাইট নিরাপদ রাখার কিছু উপায়ঃ

পিসিআই ডিএসএস অর্থ পেমেন্ট কার্ড শিল্প – ডেটা সুরক্ষা মান, এটি ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি প্রতিরোধ এবং একটি নিরাপদ প্রতিষ্ঠানের জন্য দরকারী পেমেন্ট গেটওয়ে । এটি ওয়েবসাইটের ডেটাকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া রয়েছে SSL সার্টিফিকেট। এসএসএল সার্টিফিকেটকে বলে সিকিওর সকেট যেগুলো আপনার ওয়েবসাইট এর ডেটা ও গ্রাহকের ডেটা আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর মেইনটেন্যান্স, সিকিউরিটির দায়িত্ব টি দিতে পারেন বিশ্বস্ত কোনো আইটি ফার্মের হাতে। 

পরিশেষেঃ

একটি ওয়েবসাইট সিকিউরিটি এবং মেইনটেন্যান্স আপনার ই-কমার্স বিজনেস এর সাফল্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আপনার  ই-কমার্স ওয়েবসাইট টি কে সিকিউর রাখার জন্য আপনাকেই নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। ইয়াপ্পোবিডি ক্লায়েন্টের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ওয়েবসাইটের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে। যে কোন ডিজিটাল সেবা গ্রহনে ইয়াপ্পোবিডির  এর সাথে যোগাযোগ করুন এবং সেবা গ্রহণ করে চিন্তামুক্ত থাকুন।

Facebook Comment