You are currently viewing রেসপন্সিভ ওয়েব ডিজাইন কি এবং কেনো দরকার?

রেসপন্সিভ ওয়েব ডিজাইন কি এবং কেনো দরকার?

আগে প্রযুক্তির এতো অগ্রগতি না থাকায় শুধুমাত্র বড় বড় কোম্পানি তে তাদের অফিশিয়াল কাজে কম্পিউটার ব্যাবহার করা হতো। এটা অবশ্য নব্বই দশকের ও আগের কথা। তারপর প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় কম্পিউটার এর মুল্য কমে যাওয়ার ফলে এটি সবার কাছে পৌঁছাতে শুরু করলো। তাই তখন যে সব ওয়েবসাইট তৈরি হত সেগুলো কে কম্পিউটার ফ্রেন্ডলি করে করা হত। আগেকার মাক্সিমাম ওয়েবসাইট-ই তৈরি হতো এইচ.টি.এম.এল দ্বারা। কিন্তু 4G নেটওয়ার্ক  যেন এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এক পরিসংখ্যান এ দেখা গেছে, আগে ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রায় ৯০% ইউজার-ই ছিলো যারা কম্পিউটার ব্যাবহার করত। কিন্তু বর্তমানে ২০২২ সালে এই সংখ্যাটার হিউজ পরিবর্তন হয়েছে। প্রায় ৫৮% মানুষ স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবলেট ব্যবহার করে ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে। এবং দিন দিন এই সংখ্যা টা বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। এইচ টি এম এল দ্বারা যেসকল ওয়েবসাইট তৈরি করা হত সেগুলো কম্পিউটার ভিউ এ ভালো করে দেখা যেতো। কিন্তু একটি ইউজার যখন তার স্মার্ট ফোন, ট্যাবলেট দিয়ে কোনো একটা টপিক গুগলে সার্চ করতো তখন সেটি কে জুম করে দেখতে হত। এই সমস্ত নানা ধরনের জটিলতার জন্য প্রথম ২০০২ সালে একজন রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট তৈরি করে। তারপর সি এস এস ব্যবহার করে রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট তৈরি করার সংখ্যা টা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০১৫ সালে যখন গুগল পাবলিশ করলো রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন ব্যাবহার করে তৈরি ওয়েবসাইট ইউজার ফ্রেন্ডলি তখন থেকে রেস্পন্সিভ  ওয়েব ডিজাইন ব্যাবহার করে  সবাই ওয়েবসাইট তৈরি করা শুরু করলো। আর তখন থেকেই ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে অনেক পরিবর্তন এসেছে।

রেসপন্সিভ ওয়েব ডিজাইন কি: 

আপনার ওয়েবসাইট টি সকল  ডিভাইসে ভালো করে দেখানোর জন্য অর্থাৎ কোনো ধরনের জুম, সোয়াইপ করা ছাড়া সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য এইচ টি এম এল এবং সি এস এস ব্যবহার করে যে ধরনের ওয়েব ডিজাইন করা হয় তাকে রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন বলে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে এইচ টি এম এল এবং সি এস এস ব্যবহার করে যে ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট গুলো  তৈরি করা হয় তা  বিভিন্ন ডিভাইস এর স্ক্রিন অনুযায়ী সংকুচিত, প্রসারিত এবং আকার পরিবর্তিত হয়। উদাহরণ এর মাধ্যমে বিষয়টি ক্লেয়ার করা যাক। ধরুন আপনার একটি কম্পিউটার আছে এবং আপনার বন্ধুর একটি স্মার্ট ফোন রয়েছে। আপনারা দুইজন-ই একটি ওয়েবসাইটে ঢুকলেন। এখন ওয়েবসাইট টি আপনার কম্পিউটার থেকে খুব সহজেই আপনি পড়তে পারছেন কিন্তু আপনার বন্ধুকে ওয়েবসাইট টি পড়ার জন্য স্ক্রিন জুম করতে হচ্ছে। এর কারণ কি বলতে পারেন? কারণ ওয়েবসাইট টি শুধু মাত্র এইচ টি এম এল ডিজাইন দ্বারা  ডেভেলপ করা। আপনার বন্ধুর যেহেতু ওয়েবসাইট টি পড়তে কষ্ট হচ্ছে সেহেতু স্বভাবতই সে ওয়েবসাইট টি থেকে বের হয়ে যাবে।  আপনারা দুইজন-ই এবার আরেকটি ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করলেন এবং এই ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট গুলো আপনারা দুইজন-ই খুব ভালো ভাবে পড়তে পারলেন। কারণ এই ওয়েবসাইট এর ডিজাইন এইচ টি এম এল এবং সি এস এস ব্যবহার করে ডেভেলপ  করা।  সি এস এস ব্যবহার করে ডিজাইন করা ওয়েবসাইটটি কেই সহজ ভাষায় রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন বলে। রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন সকল ডিভাইস এই ভালো ভিউ দেয়। অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইট এ যদি আপনি আপনার কম্পিউটার থেকে প্রবেশ করেন তাহলে এটি কম্পিউটার ভিউ এ দেখাবে আবার সেম ওয়েবসাইটটি তেই যদি আপনি আপনার স্মার্ট ফোন দিয়ে ঢোকেন তাহলে এটি জুম করার প্রয়োজন নেই এমনকি কন্টেন্ট গুলো ভেঙ্গে যাওয়ার ও ভয় নেই। ট্যাবলেট দিয়ে ঢুকলেও আপনি ভালো মত কন্টেন্ট গুলো দেখতে পারবেন। অর্থাৎ এটি সকল ডিভাইস এই সুন্দর মত ভিজিবল। তাই দিন যত যাবে সার্চ ইঞ্জিন এ রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইনের ওয়েবসাইট এর সংখ্যা টা ও বাড়বে। 

ওয়েব ডিজাইনরেসপন্সিভ ওয়েব ডিজাইন এর সুবিধা:

দিন যতই বাড়ছে রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন এর ব্যবহারটা ও তেমন বাড়ছে। রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন এর অসংখ্য সুবিধা রয়েছে। এটি আপনার ওয়েবসাইট এর এসইও, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স, কনভার্সন রেট এবং আপনার ওয়েবসাইট এর পাবলিসিটির ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো। 

ভালো মানের ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX): 

রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট এ সবচেয়ে ভালো ইউজার এক্সপেরিয়েন্স প্রভাইড করে। একজন ইউজার আপনার ওয়েবসাইটটি তে কতক্ষণ ধরে স্টে করছে তার উপর ডিপেন্ড করে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স এর রেটিং করা হয়। আপনার ওয়েবসাইট টির ভিউ যদি ভালো না হয়, ইউজার কে যদি বার বার জুম করে কনটেন্ট গুলো পড়তে হয় তাহলে ইউজার টি আপনার ওয়েবসাইটে বেশিক্ষণ থাকবে না। কিন্তু আপনার ওয়েবসাইট টি যদি ইউজার এর ডিভাইস এর স্ক্রিন এর সাইজ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয় তাহলে ইউজারটির মেন্যু, লিংকে ঢোকা, যেকোনো ধরনের ফর্ম পূরণ করায় কোনো প্রকার অসুবিধা হবে না। ফলে তারা আপনার ওয়েবসাইট টি ব্যাবহার করে কমফোর্টেবল ফিল করবে এবং আপনার ওয়েবসাইট এর ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX) রেট বাড়বে।

ট্রাফিক এর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকবেঃ 

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের শেষের দিকে বিশ্বের ৫২% ওয়েব ট্রাফিক এসেছে মোবাইল ইউজার এর থেকে। যা সমস্ত ওয়েব ট্রাফিকের অর্ধেক এর থেকেও বেশি। তাই বোঝাই যাচ্ছে রেস্পন্সিভ ডিজাইন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কমার্শিয়াল সাইট অথবা প্রাতিষ্ঠানিক সাইট যা-ই থেকে থাকুক না কেনো, আপনার উচিৎ হবে অতি দ্রুত ওয়েবসাইট টি কে রেস্পন্সিভ ডিজাইন করে নেওয়া।

রক্ষণাবেক্ষণ করায় সুবিধা: 

বেশ কিছু দিন আগে মোবাইল ফোন ইউজার দের জন্য ওয়েবসাইট এর আলাদা ভার্সন  তৈরি করা হত।  যার মাধ্যমে একজন মোবাইল ইউজার তার ডিভাইসের ছোট স্ক্রিন দ্বারা ওয়েবসাইট এর কন্টেন্ট গুলো দেখতে পারতো। তবে এই প্রক্রিয়া টি রেস্পন্সিভ ডিজাইন এর থেকে বেশি সময় সাপেক্ষ। এই মোবাইল ভার্সন তৈরি করার  আরও একটি অসুবিধা হলো এখানে আপনাকে বেশি টাকা খরচ করতে হবে, কারণ একজন ওয়েব ডেভেলপার এর একটার জায়গায় দুইটা সাইট ডেভেলপ করতে হবে। এতে আপনার সময় এবং শ্রমের ও অপচয় হবে। কিন্তু রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইন এর ক্ষেত্রে আপনাকে এত প্রব্লেম ফেস করতে হবে না এবং রক্ষণাবেক্ষণ করাও সহজ।  এক আঘাতে দুই সাপ মারার মতো। 

ওয়েবসাইট লোডিং হওয়ার সময় কমবে: 

রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট গুলো সাধারণ অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে দ্রুত লোড নেয়। স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটেও অনেক দ্রুত লোডিং হয়ে থাকে। এত দ্রুত লোড হওয়ার পেছনে দায়ী রেস্পন্সিভ ইমেজ ও ফ্লুইড গ্রীড। পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে ৫৩% মোবাইল ইউজার একটি ওয়েবসাইট লোড হতে ৩ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগার কারণে ওয়েবসাইট থেকে বের হয়ে গেছে। অপরপক্ষে যেসব ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড ভালো সেই ওয়েবসাইটে ইউজার কন্টেন্ট গুলো পড়তে বেশি কম্ফোর্টেবল ফিল করে। যার ফলে কনভারসন রেট বৃদ্ধি পায়। তাই আপনার ওয়েবসাইট টি অবশ্যই রেস্পন্সিভ ডিজাইনে করা উচিত। 

ভালো র‍্যাংক পাওয়া যায়: 

২০১৫ সালের পর থেকে যে ওয়েবসাইটগুলো রেস্পন্সিভ ডিজাইনে করা সেগুলো সার্চ ইঞ্জিনে বিশেষ করে গুগলে ভালো র‍্যাংক পায়। আর গুগলে ভালো র‍্যাংক পাওয়া মানে বিশাল বেপার।

পরিশেষেঃ

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কোথা থেকে আপনি ভালো ওয়েব ডেভেলপিং এর সার্ভিস টি পাবেন। আপনার ওয়েবসাইটটি কে আজই রেস্পন্সিভ ওয়েব ডিজাইনে ডেভেলপ করতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে। আমরা-ই দিয়ে থাকি সব থেকে সেরা সার্ভিস। প্রয়োজনে আমাদের অফিস ভিজিট করুন। আমাদের কাস্টমাররা সব সময় আমাদের ব্যবহার এবং আমাদের কাজে স্যাটিসফাইড। তাই দেরি না করে আপনার ওয়েবসাইট টি কে ডেভেলপ করতে আজই যোগাযোগ করুন Yappobd.com এর সাথে। 

Facebook Comment