You are currently viewing যেকোনো ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট এর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস কেন সেরা?

যেকোনো ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট এর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস কেন সেরা?

আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে অনলাইনে যে কোনো ব্যবসা বা পণ্যের প্রমোশনের ক্ষেত্রে ফেইসবুকই একমাত্র হাতিয়ার। আর অনেকেই এই ফেইসবুককে ব্যবসার জন্য খুবই কার্যকরী মাধ্যম মনে করে। ফেসবুক পেইজ মূলত একটি প্রমোশনাল টুল হলেও আমাদের দেশের ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা এটিকে মার্কেটিংয়ের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তবে এর একটি বিশাল দল নিজস্ব ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে নিজেদের ব্র্যান্ডিং করছেন। সচেতন ক্রেতাগণও ওয়েবসাইট নির্ভর ব্যবসাগুলোকে নির্ভরযোগ্য মনে করছেন। এক্ষেত্রে যেকোনো ওয়ার্ডপ্রেস সাইট ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট হিসেবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করছে। যা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা খুবই সহজ। ব্যবসার ধরণ, পরিধি বা পরিচালনার কৌশল অনুযায়ী এটিকে কাজে লাগাতে পারলে এ-থেকে খুব ভালো পরিমাণ মুনাফা লাভ করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

ওয়ার্ডপ্রেস কি? যেকোনো ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট এর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস কেনো সেরা? ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করার উপায় বিস্তারিত জানতে হলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ পড়তে হবে। কেননা এসম্পর্কিত প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় খুব সহজভাবে সরল ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। দেরি না করে চলুন বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক। 

ওয়ার্ডপ্রেস কি?

বর্তমানে সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্লগ পাবলিশিং অ্যাপ্লিকেশন এবং শক্তিশালী কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) যা পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল দ্বারা তৈরিকৃত ওপেন সোর্স ব্লগিং সফটওয়্যার হলো আমাদের আজকের এই বহুল পরিচিত ‘ওয়ার্ডপ্রেস’। কোনো প্রকার পিএইচপি, মাইএসকিউএল বা এইচটিএমএল জ্ঞান ছাড়াই একটি প্রোফেশনাল মানের ওয়েবসাইট তৈরি করতে ওয়ার্ডপ্রেসের জুড়ি মেলা ভার। যার কারণে এর চাহিদা এবং কাজের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। 

যে কেউ একেবারে ফ্রি-তেই এটিকে নিজের ওয়েব সার্ভারে (web server) ইনস্টল করতে পারে। যার মাধ্যমে সহজেই যেকোনো রকমের ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে নেওয়া যায়। ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা ওয়েবসাইট বানানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ওয়েব হোস্টিং একাউন্ট বা হোস্টিং সার্ভার থাকতে হবে। 

ওয়ার্ডপ্রেসকে (WordPress) কে সংক্ষেপিতভাবে WP বলা হয়ে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ণ ফ্রি এবং এটি পুরোপুরি Open Source সাইট। যার কারণে চাইলেই এর সবকিছুই নিজের মতো করে সাজিয়ে নেয়া য়ায়। বর্তমানে এটি সবচেয়ে সহজ, শক্তিশালী এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট তৈরির ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। 

রেডি ই-কমার্স

ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি?

প্লাগিন হলো মূলত একাধিক ফাংশনের সংমিশ্রণে গঠিত একটি মিনি সফ্টওয়্যার। এটি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ডে এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্য বা ফিচার (Feature) যুক্ত করে। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি প্লাগিনের “WP Form” প্লাগিন ইনস্টল করেন তবে আপনি নিজের ওয়েবসাইটের জন্য কন্টাক্ট ফর্ম (Contact Form) তৈরি করতে পারেন। একইভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করার পর আপনার বিভিন্ন ফিচারের দরকার পরতে পারে। যা আপনি ফ্রিতে প্লগিনের মাধ্যমে করতে পারবেন।

আপনি যদি সঠিকভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কাস্টমাইজ করতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই প্লাগইন ইনস্টল করতে হবে। এটি আপনাকে বিভিন্ন নতুন নতুন functions ওয়েবসাইটে যোগ সাহায্য করতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে কাজ করতে হলে প্লাগিন সম্পর্কে জানা কতটা গুরুত্বপূর্ণ! 

ওয়ার্ডপ্রেস কেনো জনপ্রিয়?

বলা হয়ে থাকে, বিশ্বের প্রায় ৩৫% ওয়েবসাইট যা ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। এই তথ্য থেকেই বোঝায় এটি কতটা জনপ্রিয়! বেশি জনপ্রিয় জিনিসের প্রতি মানুষের চাহিদাও বেশি থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটি ওয়েবসাইট খুব কম খরচে তৈরি করা যায়। অন্যান্য টেকনোলজি ব্যবহার করে ওয়েবসাইট করতে তার তুলনায় সর্বনিম্ন ২ থেকে ৩ গুন বেশি খরচ হয়। 

কম খরচের কারণে বেশিরভাগ ক্লাইন্ট চায় তাদের সাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়েই তৈরি করতে। পাশাপাশি এটি যেকোনো ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয়। কেননা প্রতিটি ব্যবসায়ীই চাইবে যতটা সম্ভব কম মূলধন ইনভেস্ট করে পুরো কার্যক্রমটিকে সাজানো-গোছানো যায়। এক্ষেত্রে প্রায় পানির দামেই ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে একটি ই-কমার্স সাইট তৈরির সুযোগ পাচ্ছে সুবিধাভোগীরা। ওয়ার্ডপ্রেস এর জনপ্রিয়তার পেছনে বিভিন্ন কারণ কাজ করে। 

চলুন এর বেশকিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসি।

ফ্রি ও ওপেন সোর্স সফটওয়্যারঃ

ই-কমার্স সাইট হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস এর জনপ্রিয়তার কারণের মূলেই রয়েছে এটির সহজলভ্যতা। ফ্রি সফটওয়্যার হওয়ায় ব্যবসায়িক কাজে যেকেউ বিনামূল্যে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করতে পারে। সাধারণত অন্যসব ওয়েবসাইট তৈরীর প্ল্যাটফর্ম মোটা অংকের টাকা দাবি করে। কিন্তু সুলভ মূল্যে হোস্টিং ও ডোমেইন কিনে ওয়ার্ডপ্রেস এর সাহায্যে খুব সহজেই অল্প খরচে একটি ওয়েবসাইট তৈরী সম্ভব।

ব্যবহারে সুবিধাঃ

ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করাই সবচেয়ে সহজ। যার কারণে এটি জুমলা, ড্রুপাল, ইত্যাদির মত অনেক সিএমএস প্ল্যাটফর্ম থেকেও এগিয়ে রয়েছে। ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে কোনো পূর্বধারণা ছাড়াই যেকেউ খুব সহজেই তা তৈরি এবং ব্যবহার করতে পারবে। ব্যবসায়িক কাজে ব্লগ লেখা হোক কিংবা পেজ তৈরী, সকল কাজই ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে যেকেউ করতে পারে। 

থিমঃ

ওয়েবসাইট এর প্রধান আকর্ষণ থিমের উপরই নির্ভর করে। যার মাধ্যমে যেকোনো ওয়েবসাইটের ডিজাইন নির্ধারিত হয়। ওয়ার্ডপ্রেস এর ডিরেক্টরিতে সাজানো রয়েছে অসংখ্য ফ্রি থিম। এসব ব্যবহার করে আপনি সহজেই যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারেন। ফ্রি থিম এর পাশাপাশি বিভিন্ন পেইড থিমও রয়েছে। যা আপনি থিমফরেস্ট এর মতো মার্কেটপ্লেস থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন। অনলাইন বিজনেসের জন্য যেকোনো পারফেক্ট থিম এড করার সাথে সাথে নতুন ডিজাইনে সজ্জিত হয়ে যাবে আপনার পুরো ওয়ার্ডপ্রেস ই-কমার্স ওয়েবসাইটটি। 

প্লাগিনঃ

ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করলে বেসিক সব ফিচার সাথেই পাওয়া গেলেও ওয়ার্ডপ্রেস এর ফাংশনালিটি উল্লেখযোগ্য হারে বর্ধিত বা উন্নত করতে চাইলে ব্যবহার করতে হয় ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন। আপনি চাইলে এগুলোকে অ্যাপ এর সাথে তুলনা করতে পারেন। মোবাইলে থাকা বিভিন্ন অ্যাপ যেমন আপনাকে বিভিন্ন সুবিধা দেয়, তেমনি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিনও সাইটে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফিচার যুক্ত করে। ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ব্যবহার করার মাধ্যমে যেকোনো নতুন ফিচার যুক্ত করা সম্ভব ওয়ার্ডপ্রেস ই-কমার্স ওয়েবসাইটে। এছাড়াও ওয়ার্ডপ্রেসে যেকোনো সমস্যার সমাধানেও বিভিন্ন টাইপের প্লাগিন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

সাপোর্টঃ

ওয়ার্ডপ্রেস ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার হলেও এই সফটওয়্যারকে ঘিরে কাজ করছে বেশ বড়সড় একটি কমিউনিটি। যার ফলে ওয়ার্ডপ্রেস সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধান বের করা বেশ সহজ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে আজকাল। এছাড়াও ওয়ার্ডপ্রেস অত্যন্ত জনপ্রিয় বলে যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে ব্লগ, ইউটিউব, ইত্যাদির কল্যাণে অল্প সময়েই সে সমস্যার সমাধান করা যায়। 

এসইওঃ

ওয়ার্ডপ্রেস ই-কমার্স ওয়েবসাইট এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে বেশ উপকারী। ওয়ার্ডপ্রেস প্রথম থেকেই সার্চ ইঞ্জিন সমূহকে প্রাধান্য দিয়ে এসইও-বান্ধব সফটওয়্যার তৈরী করে আসার ফলে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে তৈরী ওয়েবসাইটে গুগল থেকেই অসংখ্য ভিজিটর পেতে পারেন। পাশাপাশি বিভিন্ন প্লাগিন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের এসইও কে উন্নত করা যায়। 

এছাড়াও আপনি চাইলে আলাদা ভাবে আপনার ওয়েবসাইট এর এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করে নিতে পারেন। আমাদের আছে  দক্ষ এসইও এক্সপার্ট।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

ওয়ার্ডপ্রেস এর অসুবিধাঃ

আমরা জানি প্রতিটা জিনিসের সুবিধা, অসুবিধা দুটো দিকই থাকে। 

ঠিক তেমনি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে তেমনই কিছু অসুবিধাও বেশ লক্ষণীয়। যেমনঃ-

  • ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারে আপনাকে সাব-ডোমেইন ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটের নামের শেষে অটোমেটিক্যালি wordpress.com লেখা চলে আসবে। যা খুবই বাজে দেখাবে। 
  • ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর থাকুক না কেনো আপনি আলেক্সা র়্যাংক পাবেন না। আমাজনের এই আলেক্সা সার্ভিসটি কখনোই সাব-ডোমেইনকে কাউন্ট করে না। 
  • ফ্রি ওয়েবসাইট ব্যবহার করলে আপনি আপনার ইচ্ছামতো থিম কাস্টমাইজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে পারেন।

সমাধানঃ

উপরিউক্ত সমস্যাগুলির সমাধান দিতে আমরা আছি আপনার পাশে। অনলাইন ব্যবসার জন্য যেমন একটি মানসম্মত ওয়েবসাইট প্রয়োজন, তেমনই সেই ওয়ার্ডপ্রেস ই-কমার্স ওয়েবসাইটটিকে সঠিকভাবে সাজানো-গোছানোটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এই কাজটি করতেই আমরা আছি আপনার পাশে। স্বল্প মূল্যে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট সম্পর্কিত যেকেনো সার্ভিস নিতে আজই যোগাযোগ করুন। 

শেষ কথাঃ

যতটুকু বোঝা যাচ্ছে, ওয়ার্ডপ্রেস এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। সম্পূর্ণ ফ্রি এবং উন্মুক্ত হওয়ান পাশাপাশি বিশ্বের এক নম্বর কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হওয়ায় ব্যবসায়িক কাজে এটি ব্যবহার করা বেশ যুক্তিযুক্ত পয়েন্ট৷ পাশাপাশি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট সম্পর্কিত কাজগুলো যদি একটু ভালোভাবে আয়ত্ব করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই মার্কেটপ্লেসে কাজ করার জন্য উপযুক্ত হয়ে গেলেন। অর্থ্যাৎ এক ঢিলে দুই পাখির মারার কাজটি হয়ে গেলো৷ 

 

Facebook Comment