You are currently viewing মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর সুবিধা কি?

মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর সুবিধা কি?

বর্তমানে ব্যবসা বাণিজ্যে কোভিড-১৯ এর প্রভাব খুব বাজে ভাবে পড়তে শুরু করেছে । দীর্ঘ লকডাউনে দোকানপাট সব বন্ধ। এক অদৃশ্য ভাইরাস এর জন্য পুরো পৃথিবী থমকে গেছে। যার ফলে দিন দিন মোবাইল,ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট ব্যবহার এর প্রবণতা বেড়েছে কয়েকগুণ। এই সুযোগটাই এখন কাজে লাগাচ্ছে অনেকেই। লকডাউনে কিন্তু মানুষের কেনাকাটা থেমে নেই বরং অনলাইনে কেনাকাটা আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। রেগুলার ইকমার্স এর পাশাপাশি মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে অনেক মানুষ কেনাকাটা করছে ঘরে বসে।

আচ্ছা আপনি সুপার শপ গুলো থেকে বাজার করেছেন কখনো? সুপারশপে এক ছাদের নিচে অনেক ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। এ কারণে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে আর দৌড়ঝাপ করা লাগছেনা। অনলাইনেও যদি এমন হয় যে একটা ইকমার্স সাইট এর মধ্যে আপনি সব ধরনের পণ্য সামগ্রী পেয়ে গেলেন! তাহলে কেমন হয় বলুন তো? হ্যা, এটাই হচ্ছে মাল্টিভেন্ডর ওয়েবসাইট। একটা পণ্য কেনার জন্য ৪/৫ টা ওয়েবসাইটে আর ঘোরা লাগছে না। এক ছাদের নিচেই সব কিছু পাওয়া যাচ্ছে। মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর কারণে আমাদের সময়ও বেচে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক Amazon, Alibaba মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স ওয়েবসাইট এর নাম শুনেছেন নিশ্চয়। আমাদের দেশেও Daraz, Ajkerdeal সহ আরো অনেক মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট চালু হয়েছে। বর্তমান সময়ে বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে চলতে গিয়ে এরকম অনেক কিছুই গ্রহণ করছে বাংলাদেশের মানুষ। তাই আজকের পর্বে আপনাদের সাথে কথা হবে মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট নিয়ে। আমরা জেনে নিবো মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর সুবিধা কি?

চলুন আমরা বিভিন্ন ধরনের ইকমার্স ওয়েবসাইট এর সাথে পরিচত হয়ে নিই।

 

রেগুলার ইকমার্স ওয়েবসাইটঃ 

ধরে নিলাম আপনার কিছু পন্য আছে। সেগুলো বগুড়া শহরের একটা ছোট্ট দোকানে রেখে বিক্রি করেন। এক্ষেত্রে কিন্তু বেশিরভাগই হবে আপনার লোকাল কাস্টমার। কেউ চাইলেই কিন্তু ঢাকা থেকে আপনার পণ্যগুলো কিনতে পারবেনা। কারণ অনলাইনে আপনার কোন পরিচিতি নেই। ধীরে ধীরে আপনি ইকমার্স এর ব্যপারে জানতে পারলেন। তারপর একটা সুন্দর ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করলেন। আপনার বাজেট অল্প হলে Yappobd তো আছেই আপানার পাশে। একদম কম খরচে একটা সুন্দর ইকমার্স ওয়েবসাইট বানানো হয়ে গেল। ব্যাস।

আপনি এবার পণ্যগুলো কয়েকটা ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ওয়েবসাইটে সাজিয়ে রাখলেন। আপনার কাছে অর্ডার আসলো। ডেলিভারি দিলেন। এইতো এইটুকুই। এটাই হচ্ছে রেগুলার ইকমার্স ওয়েবসাইট। উদাহরন হিসেবে বলতে পারি আমাদের দেশে “মীনা বাজার” এর ইকমার্স “meenaclick” একটি রেগুলার ইকমার্স।

মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স ওয়েবসাইটঃ

আপনার নিজের কোন পন্য নেই। কিন্তু আপনার একটা ইকমার্স ওয়েবসাইট আছে। বিভিন্ন ভেন্ডর তাদের পন্য বিক্রির জন্য আপনার সাইটে আপলোড করবে। পণ্যের অর্ডার আপনার কাছে আসবে ৷ তারপর আপনি ভেন্ডর থেকে পন্য নিয়ে কাস্টমারকে দেবেন, সাইট এডমিন হিসেবে একটি  কমিশন রাখবেন ভেন্ডর দের কাছ থেকে। এটাই হচ্ছে মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স ওয়েবসাইট এর ধারনা।

তবে কোন কোন মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স ওয়েবসাইট এর মালিক নিজের গোডাউন করে ভেন্ডর থেকে পন্য এনে স্টোর করে রাখে। তাই দ্রুত কাস্টমারদের কাছে ডেলিভারি করতে পারে। আবার কেউ কেউ অর্ডার আসার পরে ভেন্ডর থেকে পন্য আনে। একারণে পণ্য ডেলিভারি দিতে  লেট হয়, অনেক সময় অর্ডার বাতিল হয়। উদাহরন হিসেবে বলতে পারি আন্তর্জাতিক Amazon, Alibaba এবং আমাদের দেশে Daraz, Ajkerdeal হচ্ছে মাল্টিভেন্ডর।

ক্লাসিফায়েড এড পোস্টিং ওয়েবসাইটঃ 

বিক্রয় ডট কম, ক্লিকবিডি ডট কম থেকে কি কখনো পণ্য কেনাবেচা করেছেন? অনেকে তাদের পুরাতন পণ্য কেনাবেচার জন্য এখানে বিজ্ঞাপন দেয়। এখানে ইউজাররাই তাদের পন্য (নতুন/পুরাতন) বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন দিতে পারে। কাস্টমাররা সরাসরি সেলারের সাথে কন্টাক্ট করবে। মাল্টিভেন্ডর ওয়েবসাইট এর মত এখানে সাইট এডমিন কোন মিডেলম্যান হিসেবে থাকবে না। তাহলে সাইট এডমিন কিভাবে টাকা ইনকাম করে? প্রিমিয়াম বিজ্ঞাপন দিয়ে সেলার এর কাছ থেকে অর্থ নেওয়া যায়। এটাই হচ্ছে  ক্লাসিফায়েড এড পোস্টিং ওয়েবসাইট।

*মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর সুবিধাঃ

অল্প ইনভেস্টে ব্যবসা শুরু করা যায়ঃ

মাল্টিভেন্ডর ওয়েবসাইটের জন্য আপনার নিজস্ব কোন পণ্য দরকার হচ্ছেনা। এখানে ভেন্ডর দের কাছ থেকেই আপনি পণ্য নিবেন। যেহেতু আপনি মিডেলম্যান হিসেবে থাকছেন তাই লোকসান এর ঝুকি কম। আপনার যে খরচ গুলো করতে হবে তা হচ্ছে,ওয়েবসাইট তৈরি করা,সাইট ম্যানেজমেন্ট,মার্কেটিং,পণ্য ডেলিভারি সহ টুকিটাকি কিছু খরচ। তাই বলতে পারি আপনার বিশাল ইনভেস্টমেন্ট দরকার হবেনা একটি মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে।

অনলাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন অনেক পরিমাণে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সকল বিষয় বিবেচনা করে এটা বলা যেতেই পারে মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর ভবিষ্যৎ উজ্জল।

পণ্য সংরক্ষন এর ঝামেলা নেইঃ

স্টোরিং ও ওয়্যারহাউজিং নিয়ে আপনার কোন চিন্তা নেই। আপনি ভেন্ডর দের থেকে পণ্য নিয়ে সেগুলো কাস্টমার দের কাছে ডেলিভারি দিবেন। তাই দোকান বা গুদামঘর ভাড়া না নিয়েও বিজনেস করতে পারবেন।বিজনেস পরিচালনা করতে একটা অফিস হলেই হবে। এক্ষেত্রে পণ্য সংরক্ষন করতে বেশি জনবল বা যন্ত্রপাতি দরকার হয়না। অনেক পণ্য সংরক্ষন এর সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এই ধরনের ঝুকি মাল্টিভেন্ডর ওয়েবসাইট এর এডমিন দের নিতে হয়না।

অনেক ধরনের পণ্য একসাথে বিক্রি করা যায়ঃ

মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স ওয়েবসাইটে অনেক ক্যাটেগরি এর পণ্য আপ্লোড দেওয়া যায়। এখানে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমার তাদের চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করতে পারে। আপনি হয়তো দারাজ এর ওয়েবসাইট দেখেছেন। তাদের ওয়েবসাইটে অনেক গুলো ক্যাটেগরি এর পণ্য আপ্লোড করা আছে। তাই ক্রেতারা এক জায়গা থেকেই সব কেনাকাটা করতে পারে। সরাসরি বাজারে না গিয়েই মানুষ মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স ওয়েবসাইট থেকে জামা-কাপড়, ইলেকট্রনিক্স সহ অনেক ধরনের পন্য ক্রয় করছে বর্তমানে।

পরিকল্পনা ছাড়া কাজ করলে কাজে সফলতা অর্জন করা প্রায় অসম্ভব। তাই সময় নিয়ে চিন্তাভাবনা করে ভালো মানের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে যাতে অনেক ধরনের পণ্য একসাথে বিক্রি করা যায়।

কম ইফোর্টে বেশি লাভঃ

মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স সাইটে ভেন্ডররাই প্রোডাক্ট ডেস্ক্রিপশন লিখে থাকেন। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যাকেজিং ও ডেলিভারি এর কাজ ভেন্ডররাই করে। এজন্য মাল্টিভেন্ডর সাইট এর এডমিন দের ইফোর্ট কম লাগে। ই-কমার্স বর্তমানে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে অধিক হারে। মানুষ দিন দিন প্রযুক্তির দিকে  ঝুঁকে পড়ছে। ভবিষ্যতে ই-কমার্স ব্যবসা অনেকগুনে প্রসারিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যেহেতু মাল্টিভেন্ডর সাইটে অনেক ধরনের পণ্য থাকে তাই খুব সহজে সাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন। মার্কেটিং খুব সহজে করা যায়।

কিভাবে খুব সহজে মাল্টিভেন্ডর ইকমার্স সাইট তৈরি করা যায়?

ওয়েবসাইট তৈরির জন্য কয়েক ধরনের পদ্ধতি রয়েছে। অভিজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করলে ভালো হবে।  যারা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে তার যেন কোন সমস্যা ফেস না করে সেদিকে লক্ষ্য রেখে খরচ একটু বেশি গেলেও ভালো টেকনোলজি নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি CMS প্লাটফর্ম হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস। ওয়ার্ডপ্রেসের ইকমার্স ফিচার হচ্ছে WooCommerce। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে খুব কম খরচে ইচ্ছামত ডায়নামিক ইকমার্স সাইট বানানো সম্ভব। অনেকে একদম কম প্রাইসে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করে দেওয়ার অফার দেয়। তবে অবশ্যই তাদের কাজের কোয়ালিটি যাচাই বাছাই করে নিবেন। 

ওয়ার্ডপ্রেস ছাড়াও Megento, OpenCart, ZenCart, Shopify, PestraShop ইত্যাদি অনেক CMS রয়েছে। এর মধ্যে কিছু কিছুতে অনেক স্পেসিফিক সুবিধা পাওয়া যায়। এর পর আসি পিএইচপি/লারাভেল এর কথায়। ওয়ার্ডপ্রেস ছিলো রেডিমেড, আর পিএইচপি/ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে বানালে সেটা হচ্ছে সম্পুর্ন নিজের হাতে তৈরি ক্লিন কোড। তবে এগুলাতে খরচ একটু বেশিই হয়ে থাকে।

পরিশেষেঃ

মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট ব্যবসা অতি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। তাই যারা এই ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করতে চান তাদের উচিৎ এখনই পরিকল্পনা করে প্রস্তুতি গ্রহণ করা। এখন মার্কেটপ্লেস থেকে নামকরা ফ্রীল্যান্সার হায়ার করে ওয়েবসাইট তৈরি করিয়ে নেওয়া আমাদের দেশের অনেকের কাছে ব্যয়বহুল ও ঝামেলাপূর্ন মনে হয়। তবে কম খরচে যদি নিজেই একটা মাল্টিভেন্ডর ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে চান তাহলে আজই যোগাযোগ করুন Yappobd এর সাথে। আমরা কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী । সবসময় সেরা সার্ভিস দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Facebook Comment