You are currently viewing ফেসবুক নির্ভর ব্যবসায় সফল হতে কি কি করা উচিৎ? 

ফেসবুক নির্ভর ব্যবসায় সফল হতে কি কি করা উচিৎ? 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে সোশ্যাল মিডিয়া টি সব চাইতে বেশি মানুষ ব্যবহার করে তা হলো ফেসবুক। এইতো সে দিনের কথা, সাল টা ২০০৪, যখন ফেসবুক সবে মাত্র যাত্রা শুরু করে। তখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে স্মার্ট ফোন এভেইলেবল না হওয়ায় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যাটা ও ছিলো নগন্য। কিন্তু মাত্র ১৫ বছরের ব্যবধানে ফেসবুক যেন হয়ে উঠেছে ব্যবসা করার অন্যতম এক যুগান্তকারী মাধ্যম। এর অন্যতম কারণ হতে পারে নেটওয়ার্ক এর সহজলভ্যতা, স্মার্ট ফোন এর ব্যাপকতা এবং করোনা মহামারী। করোনা মহামারীর কথা এই জন্য বলছি যে, আগে যে মানুষটির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছিলো না সে ও ফ্রি টাইম কাটাতে কিংবা ফ্রেন্ডদের সাথে ভার্চুয়ালি কানেক্টেড থাকতে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ওপেন করেছে। বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭২৮ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। তাই এই সুযোগ টা কে কাজে লাগিয়ে গৃহিনী, কর্মজীবী, স্টুডেন্ট সব ক্যাটাগরির লোক -ই ফেসবুক এ ছোট খাটো ব্যবসা গড়ে তুলেছে। আজকে আলোচনা করবো কিভাবে এই ফেসবুক নির্ভর ব্যবসায় সফল হওয়া যায়।

ফেসবুক নির্ভর ব্যবসায় সফল হতে যা যা করা উচিৎঃ

সবাই এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। তাদের স্বপ্ন একদিন তাদের ব্যবসার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে পুরো বাংলাদেশে। সবাই তাদের ব্র‍্যান্ড কে এক নামে চিনবে। কিন্তু সবাই এই স্বপ্নগুলো কে বাস্তবে রূপ দিতে পারে না। নিচে কিছু ট্রিকস শেয়ার করা হলো যার মাধ্যমে আপনার ফেসবুক নির্ভর বিজনেস সফলতা পারবে।

রিয়াল ফেসবুক আইডিঃ

এফ-কমার্স বিজনেস এ সফলতা পেতে এবং পরবর্তী তে অনুসারী এফ-কমার্স বিজনেসম্যানদের আইকন হতে অবশ্যই রিয়াল ফেসবুক আইডি ব্যবহার করা উচিৎ। কি আশ্চর্য হলেন? আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। লজিক্যালি আপনি আপনার রিয়াল ফেসবুক আইডি দিয়ে যখন বিজনেস করবেন তখন কাস্টমারদের কাছ থেকে বিশ্বাস অর্জন করতে পারবেন। কারণ কোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে কাস্টমার টি অবশ্যই আপনার ফেসবুক আইডি টি একবার হলেও চেক করবে। আর আপনি যখন ব্যবসায় সফল হবেন তখন কিন্তু আপনার ফেসবুক আইডির মাধ্যমেই লোকজন আপনাকে চিনবে। এমনকি যেসব  অনুসারী এফ-কমার্স করতে চায় তাদের কাছে আপনি রোল মডেল এ পরিনত হবেন।

ফেসবুক গ্রুপঃ

একটা ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য ফেসবুক গ্রুপ বেশ দরকারী। কারণ ফেসবুক গ্রুপ এর মাধ্যমে আপনি আপনার বিজনেস এর প্রোডাক্টগুলো কে ডিসপ্লে করতে পারছেন। আর যারা পারসোনাল লাইফের সাথে প্রফেশন কে মিক্স করতে চায় না। তাদের অবশ্যই ফেসবুক গ্রুপ খোলাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ফেসবুক আইডি তে প্রোডাক্ট নিয়ে কিছু বললে বা পোস্ট করলে এটা পারসোনাল লাইফের সাথে মিক্স আপ হয়ে যায়। আর এগুলা অনেকেই পছন্দ করে না। ফেসবুক গ্রুপ খোলার আরও একটি বেনেফিট হলো এর মাধ্যমে আপনি অনেকগুলো কাস্টমার এর সাথে এক সাথে কানেক্টেড থাকতে পারবেন।

ফেসবুক পেইজঃ

যেকোনো সফল ব্যবসায়ীর-ই দেখবেন তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে একটা করে ফেসবুক পেইজ আছে। ফেসবুক পেইজ এর মাধ্যমে আপনি কাস্টমারদের সাথে কানেক্টেড থাকতে পারবেন, তাদের যেকোনো ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন। ফেসবুক পেইজ এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য কাস্টমারদের কে দিতে পারবেন ফেসবুকে লাইভ করার মাধ্যমে।

ফেসবুক অ্যাডভারটাইজিং সার্ভিস

ফেসবুক অ্যাডঃ

ফেসবুক অ্যাড বর্তমানে ফেসবুক নির্ভর ব্যবসায় সফল হওয়ার অন্যতম একটি মাধ্যম। কারণ ফেসবুক অ্যাড এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার খবর সকল ফেসবুক ইউজারদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। ফলে আপনার বিজনেস এর পরিচিতি বাড়বে। তবে অনেকেই জানেন না কিভাবে অ্যাডভার্টাইজিং করতে হয়। ভুল ভাবে অনেকে অ্যাড ক্রিয়েট করে ও সফলতা পায়নি। কারণ তাদের অ্যাড ক্যাম্পেইন চালু করার পদ্ধতি টি ছিল ভুল। আর যারা ভুল ভাবে অ্যাড ক্রিয়েট করে বিফল হয়েছেন তারা আমার কথা শুনে চোখ কুচকাবে৷ যারা বিফল হয়েছেন এবং যারা নতুন বিজনেস এর জন্য অ্যাড বানাবেন উভয়কেই নিচের কয়েক টা লাইন পড়ার অনুরোধ রইল। প্রথমত, আপনি যখন আপনার বিজনেস এর জন্য অ্যাড তৈরি করবেন তখন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার টার্গেটেড কাস্টমার কারা। এতে আপনার অ্যাড বানানো সহজ হবে। ধরে নিলাম আপনার একটি বুটিক শপ কিংবা কসমেটিকস এর বিজনেস রয়েছে। এখানে স্পষ্ট যে আপনার টার্গেটেড কাস্টমার ১৫-৩৫ বছরের যুবতী এবং মহিলারা। তাই এদের রুচি কে পুঁজি করে আপনার অ্যাড ক্রিয়েট করতে হবে। আপনার আশেপাশের মহিলাদের কে নিয়ে করা কেইস স্টাডির মাধ্যমে ও আপনি তাদের রুচি সম্পর্কে অবগত হতে পারেন। তাহলে তাদের পছন্দসই রঙ, সুন্দর কোয়ালিটির ভিডিও এবং সাথে আরও কিছু বিষয় মাথায় রেখে একটি রুচিসম্মত অ্যাডভারটাইজ বানিয়ে ফেলুন। দ্বিতীয়ত, অনেকেই অ্যাড মেকিং করে ভুল ওয়েতে। তারা অ্যাডভারটাইজিং করতে গিয়ে মার্কেটিং এর দিকে বেশি মনোযোগ দেয় যার ফলে কাস্টমারদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জাগে। আপনি এমন অ্যাড তৈরি করুন যেখানে মার্কেটিং এর বদলে আপনি আপনার বিজনেস এর প্রোডাক্টগুলোর গুনগত মান, আপনার প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে কেনো গ্রাহকেরা উপকৃত হবে, আপনার প্রোডাক্ট কেনো স্ট্যন্ডার্ড এই সমস্ত বিষয় ছোট পরিসরে অ্যাড এ ফুটিয়ে তুলুন। যার মাধ্যমে একজন কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হবে এবং একই সাথে আপনার প্রোডাক্ট এর ব্র‍্যান্ডিং ও হবে।

সুতরাং, নব্বই দশকের মতো অ্যাড ভারটাইজিং না করে স্মার্ট ওয়েতে কাস্টমারদের মনে যায়গা করে নিন। কেননা অতিরঞ্জিত কোনো কিছুই মানুষ এখন আর পছন্দ করে না। তাই এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে বানিয়ে ফেলুন একটা চমৎকার ফেসবুক অ্যাড । এখন ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইন চালু করার ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। তা হলোঃ

  • সুন্দর ও মার্জিত ভিডিও কন্টেন্ট

  • রেস্পন্সিভ অ্যাড তৈরি করুন

  • অ্যাড ক্যাম্পেইন এর লোকেশন নির্ধারণ করুন

  • কাস্টমার এর বয়স নির্ধারণ করুন

  • ক্যাম্পেইন এর সময় নির্ধারণ করুন

  • বাজেট অপ্টিমাইজড করুন

এই সমস্ত বিষয়গুলো সম্পাদন এর মাধ্যমে একটি অ্যাডভারটাইজিং এর কাজ সমাপ্ত হয়।

ই-কমার্স ওয়েবসাইটই-কমার্স ওয়েবসাইটঃ

বলা হয় যেকোনো ধরনের বিজনেস এর সফলতার মূলমন্ত্র নিহিত একটি ওয়েবসাইটে। হতে পারে সেটা এফ -কমার্স কিংবা ই-কমার্স। আসলে একটি কমার্শিয়াল ওয়েবসাইট এর গুরুত্ব কয়েক লাইন লিখে বোঝানো সত্যিই দূরুহ ব্যাপার। একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট আপনার বিজনেস কে সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছিয়ে দেবে। ধরুন আপনার একটি কসমেটিকস, ড্রেস, স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচ, এফিলিয়েট মার্কেটিং, দারাজ কিংবা আমাজনের মতো ই-কমার্স বিজনেস রয়েছে। তাহলে প্রথমেই যে জিনিস টা দরকার তা হলো ওয়েবসাইট। কারণ একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনি আপনার বিজনেস এর প্রোডাক্টগুলো সম্পর্কে ব্লগ লিখতে পারলেন। এবং এই ব্লগ গুগলের অ্যালগরিদম মেনে এস.ই.ও করার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট গুগলের ফার্স্ট পেজে র‍্যাংক করবে। এর ফলে একজন কাস্টমার তার অপ্রোয়জনীয় প্রোডাক্ট টি সম্পর্কে গুগলে সার্চ করলে আপনার ওয়েবসাইট এর ব্লগ টি গুগলের ফার্স্ট পেজে শো করবে। এবং স্বভাবতই কাস্টমার টি আপনার ওয়েবসাইট এই প্রবেশ করবে। কারণ লোকজন সব সময় গুগলের ফার্স্ট পেজের আর্টিকেলগুলোই পড়ে থাকে। দ্বিতীয় পেজে খুব কম লোক -ই যায়। তো, কাস্টমার টি যখন তার প্রোয়জনীয় প্রোডাক্ট এর বিস্তারিত আপনার ওয়েবসাইট এ পেয়ে যাবে তখন সে নিশ্চয়ই আপনার ওয়েবসাইট থেকেই তার পছন্দসই প্রোডাক্ট টি অর্ডার করবে। আর একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট অন্যান্য সাধারণ ওয়েবসাইট থেকে ভিন্ন কারণ ই-কমার্স ওয়েবসাইট এ অনেক ক্যাটাগরি, সাব- ক্যাটাগরি রয়েছে। এবং রয়েছে কাস্টমার এর অর্ডার কে সহজেই কনফার্ম করার সু-ব্যাবস্থা এবং পেমেন্ট গেটওয়ে মেথড। এই সমস্ত কারণে একটি ওয়েবসাইট কে ই-কমার্স বিজনেস এর সফলতার চাবিকাঠি বলা হয়।

পরিশেষেঃ

ফেসবুক নির্ভর ব্যবসায় সফলতা পেতে হলে ফেসবুক অ্যাড এর বিকল্প নেই। কারণ এর মাধ্যমে কাস্টমাররা অবগত হবে যে আপনার একটি চমৎকার বিজনেস রয়েছে। এবং এর পাশাপাশি বিজনেস কে সহজতর, সাবলীল, ভেজালহীন করতে কমার্শিয়াল ওয়েবসাইট এর ভূমিকা অপরিসীম। আপনি ও যদি চান আপনার ফেসবুক নির্ভর ব্যবসা টি সফল হোক, সাবলীল ভাবে ব্যবসা টা কানটিনিউ হোক তাহলে আজই একটি ফেসবুক ভিত্তিক অ্যাড বানিয়ে নিন এবং ব্যবসার সার্বিক সুবিধার জন্য একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে নিন আমাদের থেকে। আমরা বাংলাদেশের সর্বত্র আমাদের সেবা দিয়ে থাকি। আপনার ফেসবুক অ্যাড ক্যাম্পেইন চালু করতে  কিংবা ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর জন্য আজই ইয়াপ্পোবিডি ওয়েবসাইট এর সাথে যোগাযোগ করুন

Facebook Comment