You are currently viewing অনলাইন কাস্টমার হ্যান্ডেলিং এর ৭ টি টিপস

অনলাইন কাস্টমার হ্যান্ডেলিং এর ৭ টি টিপস

কাস্টমার হ্যান্ডেলিংঃ

অনলাইনে আপনার বিক্রয় অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কিভাবে আপনার অনলাইন কাস্টমারদের কে হ্যান্ডেলিং করছেন তার উপর। অনেক সময় দেখা যায়, সঠিক ভাবে কাস্টমার হ্যান্ডেলিং করতে না পারার জন্য আপনার বিক্রয় ভালো হয় না। আপনার অনলাইন বিজনেস থাকলে আপনাকে অনলাইনে কাস্টমারদের কে কিভাবে হ্যান্ডেলিং করতে হয়, কিভাবে তাদের সাথে ম্যানারলি কথা বলা যায় তা শিখে নিতে হবে। একজন কাস্টমার আপনার ব্যবহারে স্যাটিসফাইড হলে সে আপনার থেকেই বার বার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হবে। একটি গ্রুপ স্টাডি তে দেখা গেছে, ৭৭% কাস্টমার তাদের ফ্রেন্ডদের কে আপনার কোম্পানি থেকে প্রোডাক্ট কিনতে তখনই রিকোমেন্ড করবে যখন আপনার সার্ভিস সম্পর্কে তার পজিটিভ ধারণা জন্মাবে। সুতরাং, এখানে স্পষ্ট যে, একটি কাস্টমার কে সঠিক ভাবে হ্যান্ডেলিং করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনলাইন কাস্টমার কে হ্যান্ডেলিং করার ৭টি টিপস তুলে ধরা হলো, পুরো আর্টিকেল টা পড়লে উপকৃত হবেন।

১.ধৈর্য ধারণঃ 

প্রথম প্রথম অনলাইন বিজনেস শুরু করলে আপনার ধৈর্য থাকা টা আবশ্যক। আপনাকে অন্তত ২-৩ মাস সময় ব্যয় করতে হবে আপনার বিজনেসে কাস্টমার আনার জন্য। ধীরে ধীরে আপনার কাস্টমার বাড়বে তখন বিক্রয় ও বাড়বে। কিন্তু যে জিনিস টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো রাতারাতি কেউ-ই সফল হয় না। কথায় আছে, ” সফলতার কোন শর্টকার্ট ওয়ে নাই”। তাই প্রথম প্রথম ভালো সেল হচ্ছে না দেখে আপনি হতাশায় পড়ে যেতে পারেন। এই সময় ধৈর্য হারা হলে চলবে না। আবার আরও অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। প্রথম প্রথম আপনাকে অনেকেই নক দিবে আপনার  প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য। ধরুন আপনার জামার বিজনেস। কাস্টমারদের কোনো ড্রেস ভালো লাগলে আপনার পেইজে নক দিয়ে ড্রেসের দাম, কোন ফেব্রিকস দিয়ে তৈরী ইত্যাদি জানতে চাইবে। কিন্তু সবাই কি প্রোডাক্ট টি কিনবে? কখনোই না। তাই বলে আপনার ধৈর্য হারানো যাবে না। সব সময় একটা কথা মনে রাখবেন ” নেভার গিভ আপ”। পরিস্থিতি যত প্রতিকূলেই থাকুক না কেনো আপনার ধৈর্য টাই আসল। কাস্টমার যদি প্রোডাক্ট না কিনে তাইলে কি আপনি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন? কখনোই না। কাস্টমারদের কে ভালো ভাবে হ্যান্ডেলিং করার একটা ভালো মাধ্যম হলো তারা প্রোডাক্ট কিনুক আর না কিনুক আপনাকে ধৈর্য নিয়ে তাদের সাথে ভালো ভাবে কথা বলতে হবে। প্রোডাক্ট না কিনলেও কখনো খারাপ ব্যবহার করা যাবে না।

২.মনোযোগ দিয়ে কাস্টমার এর কথা শুনুনঃ 

অনলাইন বিজনেস এ আপনার বিজনেস এর পেমেন্ট সিস্টেম যদি ফিক্সড না থাকে তাহলে কাস্টমার প্রোডাক্ট টি কেনার সময় দর কষাকষি করবেই। কিন্তু এটা নিয়ে যদি আপনি রুড বিহেব করেন তাহলে আপনার কাস্টমার প্রোডাক্ট টি কখনোই কিনবে না। তাই সে যখন আপনাকে কোনো প্রাইজ অফার করবে সেটা মেনে নিন, ইনসাল্ট করবেন না। প্রোডাক্ট টি কেনার সময় সে তো বিস্তারিত জানতে চাইবেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে, তাই আপনার উচিত হবে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। তারপর বুঝে শুনে বিনয়ের সাথে রিপ্লে দেওয়া। ধরুন আপনি বুঝলেন যে কাস্টমার টি আপনার প্রোডাক্ট টি কিনবে না। তাই সে আপনার অনলাইন পেইজ এ মেসেজ দিয়ে যাচ্ছে আর আপনি রিপ্লে করছেন না। এক্ষেত্রে কাস্টমারের আপনার বিজনেস সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা চলে আসবে। নেক্সট এ সে আর কোনো দিন ও আপনার থেকে প্রোডাক্ট কিনবে না। প্রোডাক্ট টি যদি সে না ও কেনে আপনার বলা উচিত ” ম্যাম/ স্যার কিভাবে আপনাকে আমরা তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারি, কোনো দরকার হলে পরবর্তীতে জানাবেন ” ইত্যাদি। সবসময় আপনার কথার মাঝে পজিটিভ ভাইভস বজায় রাখুন। এতে কাস্টমার হ্যান্ডেলিং অনেক ইজি হয়ে যায়।

৩.ঠিক সময়ে রিপ্লে করাঃ 

অনলাইনে কাস্টমার হ্যান্ডেলিং এর কথা বললেই প্রথম যে কথা টা মাথায় আসে তা হলো জাস্ট টাইম এ কাস্টমার এর মেসেজ এর রিপ্লে করা। আপনি আপনার অনলাইন পেইজ এ লিখে রাখলেন ২৪/৭ খোলা। কিন্তু এদিকে আপনার কাস্টমার আপনাকে মেসেজ দিয়েই যাচ্ছে, আপনার কোনো রেস্পন্স নাই। তাহলে এক্ষেত্রে কাস্টমার আপনার বিজনেস সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা পোষণ করবে। এতে কাস্টমার এর মেজাজ ও খারাপ হয়ে যাবে। তাই কাস্টমার ধরে রাখতে চাইলে আপনার অনলাইন বিজনেস এর সব ম্যানাজমেন্ট ঠিক মতো করুন। কিছু কর্মী ও নিয়োগ করতে পারেন ভালো মত কাস্টমার হ্যান্ডেলিং এর জন্য। 

৪.সমস্যা সমাধানের পরামর্শঃ 

আপনি শুধু আপনার কাস্টমার কে প্রোডাক্ট টা সেল করেই কাস্টমার এর সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিলেন, আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে সে কোনো সমস্যায় পড়লে তা সমাধান করলেন না তাহলে এটা আপনার বিজনেস এর জন্য খুবই বাজে ইফেক্ট ফেলবে। আপনার উচিত হবে কাস্টমার এর কাছ থেকে রিভিউ নেওয়া। যদি খারাপ হয় তাহলে আপনার উচিত সেটা কে ব্যাক নেওয়া। কয়েক মাস আগে একটি অনলাইন শপ থেকে আমার পছন্দের একটি কালারের বোরখা অর্ডার দেই। বোরখা টা হাতে পাওয়ার পর দেখলাম যে সেটা সম্পূর্ণ-ই আলাদা কালার যেমন টা ডিসপ্লে করা ছিলো তার থেকে সম্পুর্ন আলাদা কালার। তারপর আমি বেপার টা অনলাইন শপের মালিক কে জানাই এবং উনি প্রোডাক্ট টি রিটার্ন নিয়ে আমার পছন্দের কালারের বোরখা টা আমাকে কুরিয়ার করে পাঠায়। এবং ভুল হওয়ার জন্য তারা আমাকে সরি বলে। এই পুরো সিস্টেম টার জন্য ওই অনলাইন শপের প্রতি আমার আস্থা অনেক বাড়লো। এর পর থেকে কিছু কেনার প্রয়োজন মনে হলে আমি ওই শপের মালিক কে-ই নক দেই।

৫.ভালো পণ্য সরবরাহঃ 

আপনি যে পণ্যই সেল করুন না কেনো আপনার উচিত হবে সবচেয়ে ভালো পণ্য টি বিক্রি করা। নিম্ন মানের পন্য সেল করে আপনি হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য উপকৃত হবেন ঠিকই কিন্তু এটি আপনার বিজনেস এ দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি সাধন করবে।হয়তো দেখতে সুন্দর দেখে কাস্টমার টি আপনার থেকে প্রোডাক্ট টি এক বার কিনবে কিন্তু যখন কিছু দিন ব্যবহার করার পর প্রোডাক্ট টি নষ্ট হয়ে যাবে তখন কাস্টমার টি আপনার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তাই ভালো মানসম্মত প্রোডাক্ট সেল করে কাস্টমারদের কে স্যাটিসফাইড রাখা উচিত। কখনোই খারাপ পণ্য দিয়ে কাস্টমারদের কে উত্তেজিত করবেন না যাতে তাদের হ্যান্ডেলিং করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। 

কাস্টমার হ্যান্ডেলিং

৬.টাইম ম্যানেজমেন্টঃ

ধরুন আপনার অনেক গুলো অনলাইনে বিজনেস আছে। এখন আপনি আপনার একটি অনলাইন পেইজ এ পোস্ট করলেন গতকাল লাইভ এ আসবেন কিন্তু অন্য একটি পেইজে কাস্টমার হ্যান্ডেল করতে করতেই আপনার লাইভ টাইম পার হয়ে গেলো।  এক্ষেত্রে আগের পেইজ টি কে  যারা ফলো করে তারা বিভ্রান্তি তে পরবে। এক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে একদম অন টাইম এ লাইভ এ আসা, নতুন পোস্ট করার সিডিউল থাকলে পোস্ট করা ইত্যাদি। ঠিক মত টাইম ম্যানেজ করতে না পারলে কিছু কর্মী ও নিয়োগ দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার পছন্দ হতে পারে ইয়াপ্পোবিডি মার্কেটিং অ্যান্ড অ্যাডভার্টাইজমেন্ট সার্ভিস।

৭.আপডেট থাকাঃ 

আপনার দোকান যেখানেই হোক না কেনো, হোক সেটা অনলাইন বিজনেস অথবা অফলাইন বিজনেস আপনার উচিত সব সময় আপডেট থাকা। মার্কেটে যে প্রোডাক্ট টি নতুন বের হবে, ক্রেতাদের সেই জিনিসের প্রতি বেশি চাহিদা থাকবে। দাম বেশি হলেও মেয়েরা চায় তারা সবার থেকে একটু বেশি-ই আকর্ষণীয় লাগুক। তাই আপনি তরুণীদের কে টার্গেট করে তাদের পছন্দের নিউ কালেকশন এর হেজাব, বোরকা সবার আগে আপনার অনলাইন শপে নিয়ে আসুন। দরকার হলে পুরাতন ড্রেস গুলোর উপর ২০% ছাড় দিন। এতে করে পুরাতন প্রোডাক্ট গুলো ও সেল হয়ে যাবে এবং আপনি নতুন প্রোডাক্ট ও বেশি বেশি আনতে পারবেন। আর আপনি যত বেশি লেটেস্ট প্রোডাক্ট আনবেন, তত আপনার বিজনেস সবার কাছে চাহিদার শীর্ষে থাকবে। যার ফলে কাস্টমার হ্যান্ডেলিং করা আপনার কাছে কোনো ব্যাপার-ই মনে হবে না। 

পরিশেষেঃ

আর্টিকেল টা পড়ে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, অনলাইন কাস্টমার হ্যান্ডেলিং কতটা জরুরি। এখন আপনি যদি আপনার অনলাইন বিজনেস এর বিস্তার ঘটাতে চান তাহলে অবশ্যই চেষ্টা করুন উপরোক্ত বিষয় গুলোর উপর নজর দিতে।

Facebook Comment