You are currently viewing ই-কমার্স বিজনেস শুরুর A to Z গাইডলাইন

ই-কমার্স বিজনেস শুরুর A to Z গাইডলাইন

ই কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন এই টাইটেল দেখেই ভাবলেন ই-কমার্স বিজনেস ব্যবসা শুরু করবেন, তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য না। তার আগে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে, ই-কমার্স বিজনেস কি? অনলাইন বিজনেস সিস্টেম কিভাবে কাজ করে? কিভাবে অনলাইন ব্যবসা শুরু করব? ইত্যাদি ইত্যাদি। এবং ভাবতে হবে আমি ই-কমার্স বিজনেস কিভাবে করব? তাছাড়া কিন্তু শুধু শুধু আপনার সময় নষ্ট হবে? 

শর্টকাট খোজেন? ধৈর্য্য নাই আপনার? রিস্ক নিতে ভয় পান? রিসার্চ করতে মন চায় না? কাজের প্রেসার নিতে পারেন না? মানুষের গালি সহ্য করতে পারেন না? তাহলে ব্যবসা আপনার জন্য না, অন্যকিছু তে মন দেন ভাল কিছু করবেন। কিন্তু শখের বশে ব্যবসা শুরু করবেন না দয়া করে। ই-কমার্স বিজনেস শুরু করতে হলে আপনাকে আগে এর আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত জানতে হবে। এত ডিমোটিভেট করার পরও আপনি এই লেখা পড়তেছেন? হ্যা আপনাকে দিয়েই হবে। আপনি প্রথম ধাপে পাশ করেছেন। কিন্তু এত খুশি হওয়ার কিছু নাই, আপনি এখনো দূর থেকে সমুদ্র দেখতেছেন, এর গভীরতা সম্পর্কে ধারনাও নাই আপনার।

ব্যবসার ব্যাপারে এলন মাস্কের কথাটা মনে আছে? Starting a company is like eating glass and staring into the abyss” – Elon Musk. আসলেই তাই। এটা স্ব-ইচ্ছায় কাচ খাওয়ার মতই কঠিন ব্যাপার। তাই বলে অসম্ভব কিছু না। পরিশ্রম করলে যে কোন কিছুই সম্ভব করা যায়।

 

ই কমার্স ব্যবসা মডেল

ব্যবসা করা অনেক কঠিন, কিন্তু এর শুরুটা আরো শতগুন কঠিন। কিন্তু টেকনোলজির উন্নতির জন্য এটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। প্রচলিত ব্যবসা এখন রুপ নিয়েছে ই-কমার্সে। যেটা ক্রেতা-বিক্রেতা দুজনের জন্যই অনেক উপকারী হয়ে গেছে। ই-কমার্স বিজনেস মানে হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক কমার্স। প্রচলিত লোকাল ব্যবসা অনলাইনের করার নামই হচ্ছে ই-কমার্স বিজনেস। ই-কমার্সের সব থেকে বড় দিকটা হল, আপনি এক জায়গা থেকে সারা বিশ্বে আপনার ব্যবসাকে প্রসারিত করতে পারবেন। আর এর জন্য কাস্টমারকে আপনার কাছে আসতে হবে না বা আপনাকে কাস্টমারের কাছে যেতে হবে না।  যারা  ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের স্বভাবতই মনে প্রশ্ন আসতে পারে কিভাবে ই কমার্স ব্যবসায় শুরু করবেন বা ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার স্টেপগুলি কি কি হতে পারে! আমরা আজকের এই আর্টিকেলে এসব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই হাজির হয়েছি। সুতরাং এক্ষেত্রে সফল হতে চাইলে পুরো আর্টিকেলটি না পড়ে যাবেন না কিন্তু!

এই আর্টিকেলটি আমি বাংলাদেশে ই কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন বিষয়ে সম্পূর্ণ একটি স্টেপ বাই স্টেপ দিকনির্দেশনা সম্পর্কে আলোচনা করবো। যাতে করে আপনি খুব সহজেই একটি ই-কমার্স প্রজেক্ট প্ল্যানিং করে তাতে সফল হতে পারেন। 

আমাদের আধুনিক পৃথিবীতে করোনাকালীন সময় তাড়াতাড়ি নিজের জায়গাকে শক্ত করে নেওয়ার মতো ভিত্তি তৈরি করেছে এই ই-কমার্স। অনেক বেকার যুবকে-যুবতীকে উদ্যোক্তা বানিয়ে তৈরি করছে অনেকের কর্মসংস্থান। যার ফলে ই-কমার্স সম্পর্কে জানার এবং বুঝার আগ্রহ আমাদের সকলের মাঝেই আছে। আধুনিক উপায়ে মানুষের পছন্দ-অপছন্দকে পুঁজি করে  ই-কমার্স কোম্পানিগুলো তাদের সেবা থেকে শুরু করে ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবস্থা তৈরি করেছে এই সেক্টরটি। 

রেডি ই-কমার্স

 

ই-কমার্স ব্যবসা কি?

ই-কমার্স ইলেকট্রনিক কমার্স নামেও পরিচিত। যা মূলত পণ্য বা সেবা ক্রয় -বিক্রয়, অর্থ স্থানান্তর, এবং ইলেকট্রনিক মাধ্যমের (ইন্টারনেট) মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তর করার প্রক্রিয়ার পরিচায়ক। মানুষকে দূরত্ব এবং সময়ের সীমাবদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে ব্যবসা করতে দেয় বলে এই সেক্টররটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 

ধরুন আপনি মার্কেটে গেলেন এবং পণ্য ক্রয় করছেন কিংবা মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন। কেমন হয় যদি আপনার সকল পণ্য ঘরে বসেই বিক্রয় করতে পারেন? ঠিক এই ব্যবস্থাটি করছে ই-কমার্স। এক্ষেত্রে আপনার মার্কেটে গিয়ে পণ্য ক্রয়ের প্রয়োজন পড়ে না। ফলে আপনি ঘরে বসেই আপনার নির্দিষ্ট পণ্যটি ক্রয় করতে পারবেন। পাশাপাশি থাকছে সকল পণ্য ঘরে বসেই বিক্রয় করতে পারার সুযোগও।

 

ই-কমার্স ব্যবসা কত প্রকার?

আপনার পছন্দ, মূলধন, এবং অনলাইন ব্যবসা মডেলের উপর ভিত্তি করে ই-কমার্স ব্যবসা বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। যা থেকে পছন্দমতো যেকোনো একটি কিংবা ততোধিক সেক্টর নির্বাচন করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল এবং কৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে।

যার মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু কৌশল নিচে উল্লেখ করা হলো:-

  • B2B ব্যবসা
  • B2C ব্যবসা
  • Affiliate বিপণন ব্যবসা
  • গুগল অ্যাডওয়ার্ড বিপণন
  • অনলাইন নিলাম বিক্রয়
  • ওয়েব বিপণন

 

কিছু ই-কমার্স বিজনেস প্ল্যান আইডিয়াঃ- 

কাপড়ের ব্যবসা

অনলাইনে ব্যবসার ক্ষেত্রে কাপড়ের ব্যবসা বর্তমানে নতুন রূপ ধারণ করেছে। যা সফলতা পেতে শতভাগ কাজ করে। কাপড় কিন্তু আমাদের সকলেরই লাগে। অফলাইনের মতো বাজেট অনুযায়ী আপনি আপনার যেকোনো পছন্দের কাপড় খুঁজে নিতে পারেন এই ই-কমার্সের মাধ্যমে। ঠিক তেমনিভাবে আপনি নিজেকে একজন সেলার হিসেবে চিন্তা করুন। ভেবে দেখুন প্ল্যানটি কিন্তু মন্দ হয় না। এই ব্যাবসার চাহিদার উপর ভবিষ্যতে আরও বেশি চাহিদা তৈরি হওয়ার আশংকা করছে মার্কেটাররা।

কম্পিউটার ও ল্যাপটপ

কম্পিউটার ও ল্যাপটপ

মানুষ অনলাইন থেকে বেশি দামের কিছু কিনতে ভয় করায় আগে কম্পিউটার ও ল্যাপটপের মতো ব্যায়বহুল প্রোডাক্টগুলি অনলাইনে কেনার কথা কেউ চিন্তায় করতো না। কিন্তু বর্তমানে অনলাইন ই-কমার্স মার্কেটে এমন অসংখ্য প্লাটফর্ম পাবেন যারা বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি বিক্রি করছে। শুধুমাত্র ল্যাপটপ আর কম্পিউটারই বা কেনো এর পাশাপাশি ল্যাপটপ, কম্পিউটার এর বিভিন্ন পার্টস কিংবা যন্ত্রাংশ নিয়েও কাজ করতে পারেন। 

অনলাইন লার্নিং সাইট

প্রায় সকল অভিভাবকেরাই নিরাপত্তার খাতিরে চায় যে তাদের ছেলে মেয়েরা যেনো সকল কিছু অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে শিখুক। আর এই সুযোগে আপনি চাইলে একটি অনলাইনে লার্নিং সাইট খুলতে পারেন। এতে যত বেশি ছাত্র ছাত্রী আপনার সাইটে শিখতে আসবে আপনি তত আয় করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনি শিক্ষা বিষয়ে নানান ক্লাস কোর্স হিসেবে বানিয়ে আপনার ই-কমার্স বিজনেসকে দাঁড় করাতে পারবেন সহজেই।

খাবার সামগ্রীখাবার সামগ্রী বিক্রি

ঘরে বসে থেকে পছন্দের যেকোনো রেসিপি বা খাবার অর্ডার করার সুযোগ আজকাল কেউই হাতছাড়া করতে চায় না। অনলাইনে যদি আপনি একটি সাইটের মাধ্যমে খাবার বিক্রির বিজনেস শুরু করেন, তাহলে লোকেরা খুব সহজে ঘরে বসে যেকোনো ফুড অর্ডার করতে পারার ফলে আপনার প্রচুর সেলিং হবে। 

ইলেক্ট্রনিক প্রোডাক্ট

ইলেক্ট্রনিক প্রোডাক্ট বিক্রি

আপনি চাইলে একটি ই-কমার্স সাইট বানিয়ে সেখানে বিভিন্ন ইলেকট্রিক প্রোডাক্ট বিক্রি শুরু করতে পারেন। কারণ বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে লোকেরা ইলেক্ট্রনিক বিভিন্ন পার্টস কিনছে। পাশাপাশি সরাসরি স্টকে রাখার দরকার পড়ে না বলে ইলেকট্রনিক পণ্য কখনো অকেজো হয়ে পড়ে না। 

কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসায় শুরু করবো?

 ই-কমার্স ব্যবসায় শুরু করতে সবার আগে একটা পরিকল্পনা তৈরি করুন। ঠিক করে নিন কোন কাজটি আগে করবেন। চাইলে নিচের লিষ্টটিকেও কাজে লাগাতে পারেন। যদিও একথা ঠিক যে প্রতিটি কাজের ধরন অনুযায়ি কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়।

 

ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলুন

ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরির প্রথম ধাপ। তবে ওয়েবসাইট তৈরির আগে অবশ্যই পূর্বে ই-কমার্স নাম বাছাই করতে হবে। প্রতিটি অনলাইন বিজনেসে একটি ওয়েবসাইট থাকা মানেই সফলতার হাতিয়ার থাকা। যারা ইতিমধ্যেই অনলাইন বিজনেস শুরু করে দিয়েছেন তারা যত দ্রুত সম্ভব একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিন। আর যারা এখনো কোনো বিজনেস শুরু করেননি তবে প্ল্যানিং করছেন তারা সবার আগে ওয়েবসাইটের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। ফলে এক্ষেত্রে সফল হওয়াটা খুব সহজ হয়ে যাবে।

অ্যাপ

অ্যাপ তৈরি করুন

ওয়েবসাইট তৈরি করার সাথে সাথে সেই রিলেটেড অ্যাপও তৈরি করে ফেলতে হবে। কেননা এটি ছাড়া ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। 

অফিস ডিজাইন করুন

অফিস ডিজাইন করে অনেক টাকা শেষ করার কোনো দরকার নেই। তবে প্রথম অবস্থায় অনেক বড় আফিস করতে না করতে পারলেও  ছোট খাটো একটি আফিস তৈরি করুন। 

কর্মচারি নিয়োগ করুন

টাকা নষ্ট না করে বেসিক কর্মচারী নিয়োগ করার চেষ্টা করুন। যে সকল কর্মচারি ছাড়া আফিস চালানো একেবারেই অসম্ভব শুরুতে কেবল তাদেরকেই নিয়োগ দিন।

প্রডাক্ট খুঁজুন

প্রোডাক্টের মিনিমাম একটি স্টক করুন। যে সকল প্রডাক্ট বিক্রি করবেন সবগুলো নিয়ে রিসার্চ করুন। খুব বেশি স্টক তৈরি করতে যাবেন না কখনোই।

বাজেট

প্রতিটি ক্ষেত্রে বাজেট তৈরি করে ফেলুন। প্রতি ক্ষেত্রে কত টাকা ব্যয় হবে তার উপর বাজের তৈরি করে ফেললে কাজে শৃঙ্খলতা থাকবে।

মার্কেটিং

একজন ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগের ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। এটি করতেই হবে। কারন একজন ডিজিটাল মার্কেটারেই পারবে আপনার ব্যবসাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে।

 

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট গাইডলাইন

ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা এবং সম্ভাবনার নতুন দিক তৈরি হওয়ার পেছনে ওয়েব ডেভলপমেন্টের হাত রয়েছে। নতুন উদ্যোক্তাদের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এটি।

ই-কমার্স বিজনেস

আর যদি জানতে চান আপনার ব্যবসার জন্য ই-কমার্স কেন এত জরুরী তাহলে আমাদের লিংক করা পোষ্টটি আপনাকে সহযোগীতা করবে ই-কমার্স সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেতে। একটি ওয়েবসাইট তৈরিতে কেমন খরচ হতে পারে জানতে ভিজিট করুন।

 

মানসিক প্রস্তুতিঃ

ব্যবসা বা অন্য কিছু যাই করতে যান সবার আগে মানসিক ভাবে তৈরি থাকাটা বেশি দরকার। সব কিছুর প্রতি পদক্ষেপেই হাজারও বাধা -বিপত্তি আসবে এসবের সাথে মোকাবেলা করার জন্য আপনাকে তৈরি থাকতে হবে। নতুন কোন ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে এটা আরো কঠিন। তাই আপনার মন কে বার বার জিজ্ঞেস করুন, আপনি সত্যিই এতকিছুর জন্য প্রস্তুত তো? আবার ভাবুন আবার ভাবুন।

নতুন ব্যবসায়ীদের সমস্যা সৃষ্টি হয় যেসব বিষয় নিয়ে সেসব হলোঃ-

  • Domain এর নাম পছন্দ করা
  • কোন কম্পানি থেকে ডোমেইন কিনবেন ?
  • কোন হোস্টিং ই কমার্স এর জন্য ভাল হবে?
  • ওয়েবসাইট কোন প্লাটফর্ম এ তৈরি করবেন ?
  • ওয়েবসাইট এ কাজ করা 
  • ওয়েবসাইট এর নিরাপত্তা

ই-কমার্স বিজনেসে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটকে পরিপূর্ণ সাজানো এবং তার মার্কেটিং কৌশলগুলো সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। পাশাপাশি কি কি নীতিমালা মেনে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করলে ভালো সেল পাবেন, তার সবকিছু অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনার জন্য সবসময় তৈরি থাকছে আমাদের ওয়েব ডেভলপমেন্ট টিম। 

পুরো টিমটির প্রতিটি দক্ষ ডেভলপার আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইটটিকে এমনভাবে তৈরি করে দিবে যাতে কোনো গ্রাহক একবার সাইটে প্রবেশ করলে মুগ্ধতার জোড়ে যেনো আর বেরুতেই না পারে। সার্ভিস নিতে সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

নামকরনঃ 

আপনার ই-কমার্সের নামকরন অনেক গুরুত্বপূর্ন একটা ব্যাপার। নাম হতে হবে সুন্দর, সহজ, ইউনিক যাতে মানুষ খুব সহজে মনে রাখতে পারে। নাম ঠিক করার সময় ডোমেইন ফাকা আছে কি না এটা অবশ্যই দেখতে হবে, ফাকা না থাকলে ওই নাম বাদ দিয়ে ইউনিক নাম খুজতে হবে। ডোমেইনের নাম কেন জরুরি সেটা পরে বলতেছি। তবে নামটা আপনার প্রোডাক্ট এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে করতে হবে, যত ছোট করা যায় তত ভাল, এতে করে পরে এসইও তে কাজে লাগবে।

 

আইনি কার্যাবলীঃ

ইকমার্সবিজনেস এর ক্ষেত্রে কিছু আইনি বিষয় আছে যা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যেমন বর্তমানে ই-কমার্স ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স অত্যান্ত গুরুতবপূর্ণ একটি বিষয় এবং ব্যবসায়িক বৈধতা সার্টিফিকেট লাগবে। এটা আপনার বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে । মনে করুন আপনি আপনার অনলাইন ব্যবসার জন্য কাষ্টমারের থেকে পেমেন্ট নিতে চাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে এটা প্রয়োজন হবে। এ ছাড়াও আরো অনেক কাজের ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার প্রমাণ দিতে অথবা বৈধতা প্রমান করতে ট্রেড লাইসেন্স সহ যাবতয় সকল কাগজপত্রগুলো অবশ্যই লাগবে।

 

প্রোডাক্ট সিলেক্টঃ

আপনার ই-কমার্সের সফলতা অনেকাংশে সঠিক প্রোডাক্ট নির্ধারনের উপর নির্ভরশীল। তাই কাস্টমারের চাহিদা আর প্রোডাক্টের সহজলভ্যতার কথা চিন্তা করে প্রোডাক্ট সিলেক্ট করুন। অলরেডি অনেক পপুলার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আছেই। মানে প্রতিযোগিতা অনেক কঠিন হবে। তাই আপনাকে এমন কিছু দিয়ে শুরু করতে হবে যেন কাস্টমার আপনার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হয়। প্রোডাক্টের অনেক ক্যাটেগরি আছে সেখান থেকে ১টা সিলেক্ট করুন, কয়েকটা ক্যাটেগরি একসাথে মিক্স করতে যাবেন না, তাহলে প্রথমেই কাস্টমারের বিশ্বাস হারাবেন। কারন জগাখিচুড়ী হলে কাস্টমার ভাববে আপনার স্পেশাল বলে কিছুই নাই। তাই ভালভাবে রিসার্চ করুন কোন প্রোডাক্টের চাহিদা অনেক কিন্তু সাপ্লায়ার অনেক কম। যেটা আপনাকে সবার থেকে এগিয়ে রাখবে।

 

ই-কমার্স পোডাক্ট সোর্স

প্রোডাক্ট সোর্সঃ

আপনি কোন ধরনের প্রোডাক্ট সিলেক্ট করছেন সেটার উপর বেজ করে এবার প্রোডাক্ট সোর্স খুজতে হবে। এর জন্য আপনাকে সব থেকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে প্রোডাক্ট এর দামের উপর। কারন, যত কম খরচে প্রোডাক্ট সংগ্রহ করতে পারবেন, তত কম খরচে আপনিও সেল করতে পারবেন। এত এত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে তাল মিলিয়ে টিকে থাকতে হলে এটার উপরেই বেশি নজর দিতে হবে।

 

ডেলিভারীঃডেলিভারী

কাস্টমারের মন জয় করার অন্যতম মাধ্যম হল প্রোডাক্ট ডেলিভারী। কাস্টমার যেন খুব দ্রুত, অক্ষত, সুন্দর প্যাকেজিং করা প্রোডাক্ট হাতে পায় এটার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা আপনাকেই করতে হবে। এটাতে যদি ব্যর্থ হন, তাহলে রিটার্ন কাস্টমার কখনোই পাবেন না, সেই সাথে নতুন কাস্টমারের সংখ্যাও দিন দিন কমতেই থাকবে। এটার ক্ষেত্রেও আপনাকে দেখতে হবে, যেন সর্বনিম্ন খরচে সব থেকে ভাল সার্ভিস দেওয়া যায়। এর জন্য আপনি ই-কুরিয়ারের সাহায্য নিতে পারেন। এখন এমন অনেক কুরিয়ার আছে যারা প্রোডাক্ট ডেলিভারী সার্ভিস দেয়। এটার অনেক ভাল একটা সুবিধা আছে, সেটা হল অর্ডার ট্র্যাকিং। এতে কাস্টমার প্রোডাক্টের রিয়েলটাইম অবস্থান জানতে পারবে, আর নিশ্চিত থাকতে পারবে। কিন্তু, এই ই-কুরিয়ার সিলেক্ট করতে হবে ভালভাবে দেখেশুনে। কারন ই-কুরিয়ার যদি সময়মত আর অক্ষত প্রোডাক্ট ডেলিভারী করতে না পারে, এর সম্পুর্ন ইফেক্ট পড়বে আপনার উপর। তাই যারা ভাল সার্ভিস দেয় তাদের থেকে সার্ভিস নিতে হবে।

পেমেন্ট সিস্টেমঃ

আপনার প্রোডাক্ট কেনার পর কাস্টমার পেমেন্ট করবে কোন মাধ্যমে সেটা ঠিক করতে হবে। অনেক অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম আছে, যেমনঃ বিকাশ, রকেট, ব্যাংক সহ আরো অনেক মাধ্যম। এগুলার মধ্যে আপনাকে এমন একটা সিলেক্ট করতে হবে যেন কাস্টমার খুব সহজে এবং নিরাপদে পেমেন্ট করতে পারে। 

পেমেন্ট

 

মার্কেটিংঃ

সব কিছুর পর এবার মার্কেটিং এর পালা। কাস্টমার যদি আপনার ব্যবসার কথা জানতেই না পারে, তাহলে ব্যবসা হবে কিভাবে। তার জন্য করতে হবে মার্কেটিং। বলা হয় ‘প্রচারেই প্রসার’। ব্যবসা টিকিয়ে রাখার অন্যতম মাধ্যমই হচ্ছে মার্কেটিং। যত ভাল মার্কেটিং করতে পারবেন আপনার ব্যবসার প্রসার তত বেশি হবে। আর এই মার্কেটিং আপনাকে করতে হবে সবসময়। সে জন্য আপনার মোট বাজেটের ৩৫% – ৪৫% সমপরিমান বাজেট রাখতে হবে শুধুমাত্র মার্কেটিং এর জন্য। মার্কেটিং করতে হবে দুইভাবে। ১. অনলাইন, ২. অফলাইন। দুই ধরনের মার্কেটিং করতে হবে। যেহেতু ই-কমার্স বিজনেস তাই অনলাইন মার্কেটিং এর উপর জোর দিতে বেশি। তাই বলে অফলাইন মার্কেটিংকে বাদ দিবেন তা কিন্তু না। অফলাইন মার্কেটিংও করতে হবে। এখানে অফলাইন মার্কেটিং নিয়ে কোন আলোচনা আমরা করব না। শুধু অনলাইন মার্কেটিং নিয়েই কথা হবে।

 

অনলাইন মার্কেটিংঃ

অনলাইন মার্কেটিং বলতে সোস্যাল মিডিয়া আর ওয়েব সাইট গুগল র‍্যাঙ্ক। প্রথম অবস্থায় আপনার ওয়েব সাইট না থাকলেও চলবে। কিন্তু সোস্যাল মিডিয়া অবশ্যই থাকতে হবে। অনেক সোস্যাল মিডিয়া আছে, যেমনঃ ফেসবুক, টুইটার, ইন্সট্রাগ্রাম, ইউটিউব সহ আরো অনেক। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ফেসবুক আর ইউটিউব সব থেকে বেশি মানুষ ব্যবহার করে। তাই আপনার একটা ফেসবুক পেজ আর ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। আপনার ই-কমার্সের নামে একটা পেজ করে ফেলুন আর প্রোডাক্টের ছবি সুন্দরভাবে পেজে পোস্ট করুন। কম সময়ের ভিডিও বানিয়ে পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করুন। আপনার টার্গেটেড এলাকা, কোন বয়সের কাস্টমার চাচ্ছেন, ছেলে নাকি মেয়ে কাস্টমার(আপনার প্রোডাক্টের উপর ভিত্তি করে) এর কাছে আপনার পেজ পৌছানোর জন্য পেজ বুস্ট করতে পারেন। শুধু বুস্ট করলেই হবে না। কোয়ালটি সম্পন্ন বুস্ট করতে হবে। এর জন্য সুন্দর ব্যানার ডিজাইন করতে হবে। সুন্দর কন্টেন্ট লিখতে হবে, আবার টার্গেটেড অডিয়ান্স নিয়ে রিসার্স করতে হবে। ব্যবসার পাশাপাশি আবার এসব নিয়ে কাজ করা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে, তাই এসবের দায়িত্ব ভাল কোন সার্ভিস প্রোভাইডারকে দিয়ে আপনার অন্যান্য কাজ গুলো সুন্দরভাবে করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ইয়াপ্পোবিডি এর ফেসবুক অ্যাডভার্টাইজিং সার্ভিস নিতে পারেন। সাশ্রয়ী মুল্যে কোয়ালিটি সম্পন্ন সার্ভিস।

ফেসবুক অ্যাডভারটাইজিং সার্ভিস

এবার গুগল র‍্যাঙ্কের পালা। তবে এর জন্য একটা ওয়েবসাইট অবশ্যই থাকতে হবে। কেউ যদি গুগল সার্চ করে “Best ecommerce in bd” বা প্রোডাক্ট ক্যাটেগরি অনুযায়ী যদি সার্চ করে যেমন- “best t-shirt seller”, “best mobile accessories”. সেই সার্চ রেজাল্টে গুগল যেন আপনার ওয়েবসাইট সবার প্রথমে দেখায় সেই ব্যবস্থা করা। এর জন্য যেটা করতে হবে সেটা হল সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন(SEO). এটা অবশ্যই আপনার কাজ না। এর জন্য SEO এক্সপার্ট বা SEO সার্ভিস সেল করে এমন কোন প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিতে হবে। এবং চাইলে আপনি আমাদের সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সার্ভিসটিও নিতে পারেন।

 

টিম-বিল্ড করাঃ

ব্যবসার প্রথম দিকে যখন আপনার কাস্টমার অনেক কম তখন পর্যন্ত আপনি একাই সব কাজ করতে পারেন। কিন্তু ধীরে ধীরে কাস্টমার বাড়ার সাথে সাথে আপনার কাজও অনেক বেড়ে যাবে। আর তখন সব কাজ একাই করতে যাবেন না। ভাল একটা টিম বিল্ড করুন। আপনি একাই যতদুর যেতে পারবেন তার থেকে শতগুন আগে যেতে পারবেন টিম কে সাথে নিয়ে। এজন্য বিশ্বস্ত টিম মেম্বার খুজে বের করে তাদের প্রশিক্ষন দিয়ে আপনার সহযোদ্ধা বানিয়ে নিন।

এই ছিল ই-কমার্স শুরুর আদ্যোপান্ত। মনে রাখবেন শুধু শুরুর প্রস্তুতি এটা। আর এগুলাই যে সবকিছু তাও না, এটা মোটামুটি একটা শুরুর ধাপ। এরপর আপনাকে আরো অনেক কিছু শিখতে হবে জানতে হবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি, প্রতিপক্ষ এসব থেকে আরো অনেক কিছু আপনাকে শিখতে, জানতে হবে। আর এগুলা কখনো বই পড়ে বা কোথাও কোর্স করে শেখা যায় না, এগুলা অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকেই শিখতে হয়। ধৈর্য্য নিয়ে যদি লড়ায়ে টিকে থাকতে পারেন তাহলে এগুলো এমনিতেই শিখে যাবেন।

 

শেষ কথাঃ

ই-কমার্স বিজনেসের ক্ষেত্রে আজ ওয়েবসাইট ওপেন করে দুই দিন পর অর্ডার পাওয়া শুরু হবে ভাবাটা নিতান্তই বোকামি। সুতরাং সময় দিন। আর আপনার অনলাইন ব্যবসার যেকোন সেবা প্রদানের জন্য ইয়াপ্পোবিডি তো আছেই। আমাদের কাছ থেকে আপনি আপনার সাধ্যমত বাজেটেই আপনার প্রথম ই-কমার্স ওয়েবসাইটি তৈরি করে নিতে পারেন। অথবা আপনার প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

Facebook Comment