You are currently viewing বিজনেস টেকসই  করতে ফেসবুক নাকি ওয়েবসাইট জরুরি?

বিজনেস টেকসই করতে ফেসবুক নাকি ওয়েবসাইট জরুরি?

বর্তমানে ডিজিটাল যুগে এনালগ পদ্ধতি ফলো না করে, সময়ের সাথে নিজেকে আপডেট করা প্রয়োজন। ব্যবসা বাণিজ্য সাথে মানুষের দৈনিন্দন জীবনের বেশিভাগ কার্যক্রম অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছে। অনলাইন নির্ভর বিজনেসকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে ওয়েবসাইট জরুরি। এই ওয়েবসাইট আপনার বিজনেসকে অনলাইন দুনিয়ায় টেকসই বিজনেস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এই প্রতিযোগীতা মূলক দুনিয়াতে অনলাইনে টেকসই বিজনেস আইডেন্টি তৈরি করতে কে না চায়? যা পরবর্তীতে তা ব্র্যান্ড ক্রিয়েট করতে সহযোগিতা করে। এজন্যই ফেসবুক পেজের চেয়ে ওয়েবসাইটের প্রতি মানুষ বেশি ভরসা করে। ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া আপনার বিজনেসের অডিয়েন্স ইংগেজ মেন্ট বাড়াতে সহযোগিতা করে।

 

কিভাবে ব্যবসায় ডিজিটাল ছোঁয়া দিবেন:

আপনার বিজনেসের অনলাইন উপস্থিতি ই মুলত ব্যাবসায় ডিজিটাল ছোয়া এনে দেয়। অনলাইন দুনিয়ায় নিজের বিজনেসকে ভালভাবে উপস্থিত করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি ওয়েবসাইটও দরকার পরে। আমরা ফেসবুক বেশি পছন্দ করি বিধায় দিন রাত সারাক্ষন ফেসবুকে থাকি। কাজ থেকে সুযোগ পাইলে অথবা কোন কিছু জানার থাকলে গুগল করার পূর্বে আমরা ফেসবুকে গিয়ে সার্চ করে থাকি। সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার প্রোফাইলের উপস্থিতি থাকলে আপনার বিজনেস আরও বেশি মানুষে সামনে উপস্থিত হবে এই কথা সত্যি। তবে ব্যবসাকে সম্পূর্ন ডিজিটালাইজ করতে হলে চূড়ান্ত মাধ্যম হল ওয়েবসাইট।

আমরা নিজেদের বাড়ী যেমন নিজের পছন্দমত সাজিয়ে নিতে পছন্দ করি ওয়েবসাইটও আমাদেরকে নিজেদের বিজনেস মনের মত করে সাজিয়ে নিতে সুবিধা দেয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে হ্যাসেল বেশি এবং বিরক্তি আসে একই সাথে ফেক আইডির ভয় সহ অন্যান্য আরও সমস্যা রয়েছে। তবে এসবের একটাই সমাধান আপনার বিজনেসের জন্য একটি সুন্দর ওয়েবসাইট যা আপনার পাশাপাশি আপনার কাস্টমাররাও পছন্দ করবে। জরিপে এমনও দেখা গেছে ওয়েবসাইট সুন্দর হওয়ার কারনে নতুন কাস্টমার রিপিট কাস্টমারে পরিনত হয়েছে। তাহলে আপনি ঠিক করুন আপনার বিজনেসের জন্য ওয়েবসাইট দরকার কি না?

মার্কেটিং

ফেসবুক নির্ভর বিজনেসঃ

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে সকল কার্যক্রম অনলাইন নির্ভর হয়ে গেছে। ছোট বড় অনেক বিজনেস ফেসবুকের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিও হয়েছে। অনেকে নতুন বিজনেস শুরু করলেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে নি। ফেসবুকে বিজনেস করার জন্য আমরা প্রাথমিক ভাবে পেজ এবং গ্রুপ ক্রিয়েট করে থাকি তবে তা সম্পূর্ন অপ্টিমাইজ না। তবে ফেসবুক বিজনেস এর ক্ষেত্রে কাস্টমারের ট্রাস্ট গুরুত্বপূর্ন এবং যা সহজে অর্জন করা যায় না।স্বাভাবিক ভাবে কোন ভিজিটর আপনার ফেসবুক পেজে গিয়ে ফেসবুক পেজ যদি গুরুত্বপূর্ন কন্টাক্ট ইনফোরমেশন না পায় তখন তার মনে সন্দেহ ঢুকে আসলে পেজটি অথিনটিক কি না?

 

ফেসবুকে ব্যাবসায় সফল হওয়ার গোপন মন্ত্র

 

কিছু দিন পূর্বে কোন কারনবশত ফেসবুক কিছু সময়ের জন্য ডাউন ছিল। এখন আপনার বিজনেস শুধুমাত্র ফেসবুক নির্ভর হয়ে থাকে তাহলে আপনাকেও ঐ সময় ব্যাবসা বন্ধ করে বসে থাকতে হবে। এবং অপেক্ষা করতে হবে কখন ফেসবুক ঠিক হবে। এই বিষয়টি অনেকের কাছে খুব ক্ষুদ্র মনে হলেও বড় বড় বিজনেস এবং স্টার্ট আপ ( Start Up ) বিজনেসের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর। কারন কাস্টমার অপেক্ষা করা পছন্দ করে না। কাস্টমারের বিরক্তি আপনার ব্যবসার জন্য অবনতির শুরু মাত্র। যা থেকে আমাদের সকলকে দূরে থাকতে হবে।

 

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে ফেসবুকের মত এত বড় প্লাট ফর্মে কোন সমস্যা হতে পারে না। কিন্তু বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো টেকনোলজির প্রতিযোগিতায় এবং ট্রেন্ডিং এর ক্ষেত্রে ইউজারের তারতম্য হয়ে থাকে। এ কারনে যে কোন একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে নির্ভরশীল হওয়া উচিত না। এই সমস্যার উপযুক্ত সমাধান হচ্ছে বিজনেস ওয়েবসাইট কিংবা ই-কমার্স ওয়েবসাইট

ফেসবুক অ্যাডভারটাইজিং সার্ভিস

 

আপনার কাছে মনের মত ওয়েবসাইট তৈরি করা বা বানিয়ে নেওয়া সময় সাপেক্ষ এবং ব্যায়বহুল মনে হয়? যদি আপনার উত্তর হ্যা হয় তাহলে আমাদের কাছে আপনার জন্য সহজ সমাধান আছে। আপনি আপনার পছন্দ মত রেডিমেড ওয়েবসাইট কিনতে পারেন। বিষয়টি নিউমার্কেট ব্র্যান্ডের আউটলেট থেকে রেডিমেড ড্রেস কেনার মতই সহজ। কয়েকটি মাত্র ক্লিক করেই আপনি আপনার পছন্দের রেডিমেড ওয়েবসাইট কিনতে পারবেন। রেডিমেড ওয়েবসাইট দেখতে চান? তাহলে ভিজিট করুন

 

শুধু ফেসবুকে নির্ভরশীল হওয়া কি ঠিক হবে?

আপনি আপনার বিজনেস এমন কোন সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রমোট করলেন যেখানে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স কম। বর্তমানে ফেসবুকের সাথে সাথে ইন্সটাগ্রাম, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট সহ অন্যান্য প্লাটফর্মে ইউজার বেশি। এক্ষেত্রে এটাও দেখতে হবে আপনি যে দেশে বিজনেস টার্গেট করছেন সেদেশের সাধারন মানুষ কোন সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশি ব্যবহার করে এবং একটিভ। এছাড়াও আরও অডিইয়েন্স ইংগেজমেন্ট সময় ট্র্যাক করতে হবে যাতে এবং লাইভ চ্যাটের মাধ্যে ইন্সট্যান্টলি কাস্টমারকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করা যায়। এই কারনে আপনার বিজনেসকে ফেসবুকের পাশাপাশি অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মেও প্রমোট অথবা শেয়ার করা দরকার। এতে যে কোন একটি প্লাটফর্মে অসুবিধা হলেও আপনার বিজনেস কোন ভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।

 

ওয়েবসাইট নির্ভর বিজনেসঃ

আপনি এবং আপনার কম্পিটিটরের একই ধরনের বিজনেস রয়েছে। কিন্তু আপনার কম্পিটিটরের নিজের বিজনেসের ওয়েবসাইট রয়েছে কিন্তু আপনার নেই। এতে করে, আপনার কম্পিটটরের চেয়ে, আপনি কিছুটা পিছিয়ে। বর্তমানে ইন্টারনেট এবং টেকনোলজির জগতে মানুষ সবকিছুই কম সময়ে হাতের কাছে পেতে চায়। তাই ওয়েবসাইট থাকায় যে কেউ চাইলে নিমিষেই নিজের এন্ড্রয়েড মোবাইল এ সার্চ করে তার ওয়েবসাইট দেখে বিজনেস সম্পর্কে জানতে পারে একই সাথে কন্টাক্ট ইনফরমেশনও পাচ্ছে সহজেই। পরবর্তীতে সুবিধামত সময়ে যোগাযোগ করে প্রাথমিক কনভারশেসন ফোনেই সেরে নিচ্ছে। এতে করে উভয়েরই সময় বাঁচলো।

ওয়েবসাইটের কারনে আপনি আপনার বিজনেসের আগ্রগতি মনিটর করতে পারবেন এবং কোন নির্দিষ্ট এলাকা কিংবা শহর বা বিভাগে রিয়েল টাইম কাস্টমার পাবেন। যে কোন বিজনেসের প্রসার লাভের জন্য ওয়েবসাইট যে পরিমান ভূমিকা রাখে সোশ্যাল মিডিয়া সেই পরিমান ভূমিকা রাখে না। এই বিশেষ কারনের জন্য হলেও আপনার বিজনেস সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি ওয়েবসাইট নির্ভর হওয়া জরুরি। কারন ওয়েবসাইট এবং ফিজিক্যাল লোকেশন যে কোন বিজনেসের ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করতে সাহায্য করে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া সেভাবে ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করতে পারে না। আর যদি কেউ দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্র্যাণ্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করে গিয়ে দেখেন তার অলরেডি ওয়েবসাইট আছে।

ইকমার্স ওয়েবসাইট

 

ওয়েবসাইট বনাম সোশ্যাল মিডিয়াঃ

ওয়েবসাইট আপনি আপনার মনের মত করে তৈরি করে সাজিয়ে নিতে পারবেন। ইউজার যেমনটি পছন্দ করে থাকে ওয়েবসাইট তেমনই হয়ে থাকে; এক কথায় ইউজার ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট। নিয়ম নীতি বা প্রাইভেসি পলিসি তৈরি করলেও সেগুলো নিজের অনুকূলে থাকে এবং কাস্টমারের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ন হয়ে তাদের নাগালের মধ্যে থাকে। আপনি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ওয়েবসাইট সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের (Google) বিপুল সংখ্যক ট্রাফিক এনে থাকে।

এছাড়াও দ্বিতীয় বৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন বিং ( Bing) আপনি আপনার ওয়েবসাইটের এসইও করলে তিন থেকে ৬ মাস সময়ের মধ্যে রেজাল্ট পাওয়া শুরু করবেন। এই বিষয়টি আপনার বিজনেসকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে যা সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও কার্যকরী। এভাবে আপনি আপনার বিজনেসকে ব্র্যান্ডে পরিনত হতে সাহায্য করবে। গুগল বিভিন্ন কিছুর উপর ভিত্তি করে ইউজারের চাহিদামত রেজাল্ট প্রদর্শন করে থাকে এবং সবসময় ইউজারকে বেস্ট রেজাল্ট দেওয়ার চেষ্টা করে।ওয়েবসাইট

অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে কোন কিছু করতে গেলে ঐ প্লাটফর্মের প্রাথমিক কিছু রুলস এবং রেগুলেশন পালন করতে হয়।এসব রুলস এবং রেগুলেশনের বাহিরে আপনি যেতে পারবেন না। অনেক সময় আপনি আপনার বিজনেসের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সোশ্যাল মিডিয়া রুলস আপনার সিদ্ধান্তকে ডিরেক্টলি ইন-ডিরেক্টলি ইনফ্লুয়েন্স করবে। মাঝে মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার রুলস ফলো করতে গিয়ে আপনাকে আপনার বিজনেসের ক্ষতির মুখোমুখিও হতে হবে। যা আপনার বিজনেসের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সোশ্যাল মিডিয়ার নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন আছে সেখানে আপনার বিজনেস প্রদর্শিত হয়। অর্থাৎ আপনার বিজনেস নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যেই থেকে যায় এবং এর বাহিরে আপনি এবং আপানার কাস্টমার যেতে পারে না।

 

ফ্রি পাইলে টাকা খরচ করব কেনঃ

পরিশেষে, অনেকের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে ফ্রি তে যখন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিজনেসে প্রফিট করছি তাইলে কেন টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট বানাব বা রেডিমেড ওয়েবসাইট কিনব? এর সহজ উত্তর হচ্ছে যদি আপনি কিছু সময়ের জন্য শখ করে বিজনেস করতে চান তাইলে নিঃসন্দেহভাবে ফেসবুকে বিজনেস রান করতে পারেন। এতে হয়ত স্বল্প লাভ করবেন আপনি। কিন্তু যদি লং টার্মে বিজনেস করতে চান এবং একটা ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করতে চান তাহলে ওয়েবসাইটের কোন বিকল্প নেই। ওয়েবসাইটের কারনে আপনার বিজনেস এবং ব্র্যান্ডের উপর মানুষের আস্থা তৈরী হবে এবং শুধুমাত্র নাম শুনেই মানুষ কিনতে চাইবে। তখন তাদের মধ্যে প্রোডাক্ট কোয়ালিটি নিয়ে কোন সন্দেহ থাকবে না। কারন তখন মানুষ আপনার উপর অলরেডি ট্রাস্ট অর্জন করে ফেলছে। যা সোশ্যাল মিডিয়া বা ফেসবুক নির্ভর বিজনেসে অর্জন করা সম্ভব নয়।পার্থক্যটা এখানেই।

আপনার যদি ওয়েবসাইট বিষয়ে যে কোন গাইডলাইন প্রয়োজন পড়ে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। লেখাটি  পড়ে আপনার মতামত  জানাতে পারেন। এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন।

Facebook Comment